নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের নগরকান্দায় ডাক্তারের অবহেলায় মলিনা বেগম (১৯) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু এবং রোগীকে মৃত ঘোষণার পরে রেফার্ড করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার শহীদনগর ইউনিয়নের ঈশ্বরদী গ্রামের আঃ গফ্ফার শেখের বিবাহিতা কন্যা মলিনা বেগম কীট নাশক জাতীয় পান করে অসুস্থ হলে নগরকান্দা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনেরা। তখন ঘড়ির কাটায় রাত ২ টা। অনেক ডাকাডাকির করেও কোনো চিকিৎসককে পাওয়া যাচ্ছিলনা। প্রায় দেড় ঘন্টা অপেক্ষার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক রনজিৎ কুমার রুদ্র গেটের বাইরে এসে কোনরূপ ব্যবস্থাপত্র না দিয়ে রোগীকে ফরিদপুর নিয়ে যেতে বলে তিনি আবার ঘুমাতে চলে যান।

যেভাবেই হোক মেয়েকে বাঁচাতে ফরিদপুর মেডিকেলে নেয়ার উদ্দেশ্যে মলিনার মা অসুস্থ্য মেয়েকে নিয়ে গভীররাতে নগরকান্দার বাজারের সড়কে একটি গাড়ীর খোঁজ করছিলেন। পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগীতায় রোগীকে পূনরায় নগরকান্দা হাসপাতালে নিয়ে যান।

স্থানীয় খোলাচোখ পত্রিকার সম্পাদক মাহবুব আহাদ বলেন, রাত তখন সোয়া তিনটা। বাজার পাহারাদার আমাকে রোগীর বিষয় জানালে আমি রোগীকে নিয়ে পূনরায় হাসপাতালে যাই। প্রায় ১৫ মিনিট অপেক্ষার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রনজিৎ কুমার রুদ্র আসেন। রোগীকে ভর্তি না করার কারন জানতে চাইলে তিনি জানান, এই রোগীকেতো ফরিদপুর মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে। রেফার্ডের কোন কাগজপত্র না দেওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। পরে পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে চিকিৎসার তাগিদ দিলে ডাঃ রনজিৎ কুমার রোগীকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। মৃত্যু ঘোষণার পরে তিনি আমার সামনেই রেফার্ডের কাগজ লিখে মলিনার মায়ের হাতে ধরিয়ে দেন।

মৃত্যুর পরে কেন রেফার্ড করা হলো জানতে চাইলে অভিযুক্ত ডাক্তার রনজিৎ কুমার রুদ্র বলেন, ৩/৪ বার পরীক্ষা করার পর তাকে মৃত মনে হলেও পরে মনে হয়েছে সে বেঁচে আছে, তাইতো তাকে রেফার্ড করা হয়েছে।

মলিনার মা কান্না জড়িতো কন্ঠে বলেন, হাসপাতালে এসে প্রায় দেড় ঘন্টা অপেক্ষা করেও ডাক্তার আমার মেয়েকে একটু দেখলোওনা। শুধু বলে দিলো ফরিদপুর নিয়ে যাও। তার অবহেলায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

হাসপাতালের এ অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নূরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলাম বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এনএস/এএস/আগস্ট ১৩, ২০১৭)