স্টাফ রিপোর্টার : ‘বন্যার পানিতে হাজার হাজার নারী-শিশু ও সাধারণ মানুষ ডুবে যাচ্ছে, লাখ লাখ মানুষ গৃহহারা। আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নেই, খাবার নেই। আবার কোথাও আশ্রয় কেন্দ্রও ডুবে যাচ্ছে, অনেক মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। অথচ আওয়ামী লীগের নেতারা বন্যাদুর্গতদের পাশে না দাঁড়িয়ে গণভবন-বঙ্গভবনে দৌড়ঝাঁপ করছেন।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

‘দায়সারা একটি প্রেস রিলিজ দিয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা নিজেদের দায়িত্ব শেষ করছেন’ বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বন্যায় ভাসছে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল। ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে ডুবে যাচ্ছে একের পর এক এলাকা। যমুনার পানি বৃদ্ধি সর্বোচ্চ রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ২৭টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দিনাজপুরে রেলপথ ও মহাসড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ এবং ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রামের টগরাই হাট এলাকার বড়পুলের পাড় সংলগ্ন রেলসেতু ধসে যাওয়ায় সারাদেশের সঙ্গে কুড়িগ্রামের রেল যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘লালমনিরহাট, দিনাজপুর, নওগাঁ, জামালপুর ও সিরাজগঞ্জে ব্যাহত হয়েছে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ। কয়েকটি জেলায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হু-হু করে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। বন্যায় তিন দিনে নারী শিশুসহ ৫৮ জনের প্রাণহানি ঘটল। গণমাধমের খবর-দু’দিনের মধ্যে ১শ’ বছরের রেকর্ড ভাঙতে পারে যমুনার পানি বৃদ্ধির।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বানের পানি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ধেয়ে আসছে ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চলের দিকে। এতে বন্যার প্রভাব পড়তে পারে রাজধানী ঢাকাতেও। শুধু তাই নয় হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, নেত্রকোণাসহ আরও কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।

গতকাল ত্রাণমন্ত্রী বলেছেন, দেশে খাদ্যের কোনো অভাব নেই। অথচ সরকারের খাদ্যের গোডাউন শূন্য। বানভাসীরা না পাচ্ছে আশ্রয়, না পাচ্ছে ত্রাণ। চারদিকে খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাবে বানভাসীরা হাহাকার করছে।’

রিজভী বলেন, ‘দেশের অধিকাংশ জেলা বন্যায় ডুবছে আর আওয়ামী লীগের নেতারা সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে অশ্রাব্য ধারাবর্ষণ করছেন। পানিবন্দি লাখ লাখ অসহায় মানুষের সঙ্গে যেন আওয়ামী লীগ উপহাস করছে।’

তিনি বলেন, ‘মূলত এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে দেশবাসীর দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার জন্যই তারা মূল সমস্যার বাইরে কথা বলছেন। বানভাসী মানুষের জন্য যেন সরকারের কিছুই করণীয় নেই। কারণ তারা তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত নন। তাই জনগণের প্রতি তাদের দরদ থাকবে না এটাই স্বাভাবিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশের সব বিত্তবানদের বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা ডুবন্ত অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ান, তাদের বাঁচান।’

(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৫, ২০১৭)