নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : বিপদসীমা ছাড়াচ্ছে শীতলক্ষার পানি। শীতলক্ষ্যা নদীতে নারায়াণগঞ্জের চারদিক পরিবেষ্টিত। ফলে এ নদীর পানি বিপদসামী ছাড়ালে বন্যার কবলে পড়বে এই জেলাটি।  শীতলক্ষ্যার বিপদসীমা হচ্ছে ৫.৫০ দাগে। বন্যা পূর্ভাবাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ওয়েব সাইটে   দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৭ আগষ্ট রাতেই শীতলক্ষ্যার পানি বিপদসীমা ছাড়াবে। এর আগে শীতলক্ষ্যার পানি সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছিল ৬.৯৩ দাগে।

গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে আসা পানিতে বাড়ছে নদীর পানির উচ্চতা। আর খুব দ্রুতই নদীর পানি বাড়ার কারণে নারায়ণগঞ্জবাসীও হতে পারে বানবাসী, বন্যায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জেও।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গিয়েছে, প্রতিনিয়তই নদীর পানি একটু একটু করে বাড়ছে। দু’দিনের বৃষ্টির কারণে নদীর পানি আরো বেড়েছে। নদীর পানি বাড়ার কারণে নদীর তীর সংলগ্ন মানুষরাও রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে।

বন্যা পূর্ভাবাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যেই আশঙ্কা করা হয়েছে এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আগামী ১৯ অথবা ২০ তারিখের দিকে নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যার পানিও বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাবে।

বন্যা পূর্ভাবাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্যে দেখা গেছে- ১৩ আগষ্ট রাত দুপুর ১২টায় শীতলক্ষ্যার পানি ছিল ৪.৯৯ দাগে (এমপিডব্লিউডি)। ১৪ আগষ্ট রাত ১০টায় ছিল ৪.৯৩ দাগে। ১৫ আগষ্ট রাত ১০টায় শীতলক্ষ্যার পানি ছিলো ৫.১৩ দাগে। ১৬ আগষ্ট রাত ১০টায় শীতলক্ষ্যার পানি ছিলো ৫.৩৬ দাগে।

ওয়েবসাইটে আগাম তথ্য হিসেবে দেয়া আছে, ১৭ আগষ্ট রাত ১০টায় শীতলক্ষ্যার পানি থাকবে ৫.৫৫ দাগে। ১৮ আগষ্ট রাত ১০টায় শীতলক্ষ্যার পানি থাকবে ৫.৭২ দাগে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, বুধবার দুপুরে শীতলক্ষ্যার পানি বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। শীতলক্ষ্যার পানি সাধারণত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র হয়ে আসে যমুনা নদী থেকে আসে। বর্তমানে যমুনার পানি বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বিপদসীমার ১ মিটার ও তার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেকারণে শীতলক্ষ্যার পানি বাড়ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শীতলক্ষ্যার পানি আরো বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। সেক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের নিন্মাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বলে তারা ধারনা করছেন।

এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম মজুমদার জানান, তারা ইতিমধ্যেই পাঁচটি উপজেলায় সভা করে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। পাঁচটি উপজেলাতেই এ বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোথায় কোথায় আশ্রয় কেন্দ্র হবে এবং সেগুলো তদারকিতেও কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া তাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে যা জেলা প্রশাসকের তত্বাবধায়নে রয়েছে।

(এমএনইউ/এসপি/আগস্ট ১৭, ২০১৭)