কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানে কৃষি জমি নষ্ট করে কোন বিদ্যুত প্লান্ট করতে নিষেধ করেছেন তা উপেক্ষা করে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার সবচেয়ে উর্বর তিনফসলী এলাকা ধানখালীতে কেন একাধিক বিদ্যুত প্লান্ট করা হচ্ছে। নিশানবাড়িয়ায় ১০০২ একর জমিতে একটি ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্লান্টের কাজ শেষের পথে। ওই জমির মালিকরা এখন পর্যন্ত অর্ধেক টাকা পায়নি। ১৩৫টি পরিবারের পুনর্বাসণ করা হয়নি। ওই প্লান্ট করতে ভারি যানবাহন চলাচলের কারনে রাস্তাঘাট নষ্ট করায় হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর লেখপাড়া এখন বন্ধের পথে। এখন একই এলাকায় আরপিসিএল আরও একটি বিদ্যুত প্ল্যান্ট করতে যাচ্ছে। এরপরে আবার কেন একই ইউনিয়নে বিদ্যুত প্লান্ট করা হচ্ছে?

আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড এর উদ্যোগে “পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ১৩২০ মেঘাওয়াট সুপার থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনে পরিবেশগত ও আর্থ-সামাজিক প্রভাব নিরূপন” বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।

শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ইয়াকুব। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এসএম রাকিবুল আহসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমান, কলাপাড়া থানার ওসি জিএম শাহনেওয়াজ, জেলা পরিষদ সদস্য এসএম মোশাররফ হোসেন। গ্রামবাসী গাজী রাইসুল ইসলাম রাজীব, গাজী আমির হোসেন, ফরিদ তালুকদার, প্রভাষক জিসান হায়দার আলমগীর প্রমুখ।সভায় উপস্থিত সাধারণ শত শত মানুষ এসময় বিদ্যুত প্লান্টের জন্য আর কোন ফসলি জমি না দেয়া এবং যে কোন মূল্যে এসব প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কোম্পানির সচিব আবুল মুনসুর। পাওয়ার পয়েন্টে প্লান্ট সম্পর্কিত পরিবেশসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড উপস্থাপন করেন মো. রব্বানি।

উল্লেখ্য কলাপাড়ার দেবপুর, চালিতাবুনিয়া এলাকায় এই বিদ্যুত প্লান্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদ তালুকদার জানান, দুই বিঘা জমিতে ধান ছাড়াও বাদাম চাষ করে বিক্রি করা টাকায় ১৩ মণ চাল কিনেছেন। এইরকম উর্বর জমি নষ্ট করে তারা কোন ধরনের বিদ্যুতপ্লান্ট করতে দেবেন না। তিনি এও বলেন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোন মানুষকে পুনর্বাসনের আগে উচ্ছেদ করা যাবে না। কিন্তু স্থানীয় এক শ্রেণির দালাল ভুল বুঝিয়ে নিজেদের স্বার্থের জন্য কৃষকের এমন সর্বনাশ করছে। যাতে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

(এমকেআর/এএস/আগস্ট ১৯, ২০১৭)