শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর :  দিনাজপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৬ লাখ গবাদিপশু। সেই সাথে প্রায় ১৪ লাখ হাঁস-মুরগিও আক্রান্ত হয়েছে বন্যায়। বন্যায় মারা গেছে প্রায় ১০ হাজার হাঁস-মুরগি। বন্যা জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে এসব গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি। খাদ্য চরম সংকটে পড়েছে গবাদিপশু। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে এসব অসুস্থ্য গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে প্রাণি সম্পদ হাসপাতালে ভীড় করছে বানভাষী মানুষ।

দিনাজপুরে বানভাসী মানুষ ও গবাদিপশু এখন একই স্থানে একই সাথে দিনাতিপাত করছে। মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুরও খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্য দিতে না পারায় গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে বানভাষী মানুষ।

জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় ৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৩টি গবাদিপশু হুমকির মুখে পড়েছে। এর মধ্যে ৩ লাখ ৭২ হাজার ৫’শ ৫টি গরু, ১’শ৭টি মহিষ, ২ লাখ ১ হাজার ৯’শ ৩১টি ছাগল এবং ১১ হাজার ৪’শ৭০টি ভেড়া রয়েছে। বন্যায় গো-খাদ্যের জন্য ২৫ হাজার ৩’শ ৪৭ একর জমির কাঁচা ঘাস ও ১ হাজার ৬’শ ৬৬ মেট্রিকটন খড় বিনষ্ট হয়েছে। এ কারণে দিনাজপুর জেলায় দেখা দিয়েছে তীব্র গো-খাদ্যের সঙ্কট।

প্রায় ১৪ লাখ হাঁস-মুরগিও আক্রান্ত হয়েছে বন্যায়। বন্যায় মারা গেছে প্রায় ১০ হাজার হাঁস-মুরগি। বন্যা জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে এসব গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে এসব অসুস্থ্য গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে প্রাণি সম্পদ হাসপাতালে ভীড় করছে বানভাষী মানুষ।
বন্যায় আক্রান্ত এসব গবাদিপশু জ্বও, ডায়রিয়া ও ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশী। প্রাণি সম্পদ চিকিৎসকরা চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছে এসব অসুস্থ্য গবাদিপশুর।

দিনাজপুর জেলা প্রানি সম্পাদ অধিদপ্তরের জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান,সরকারি হিসাব অনুযায়ী দিনাজপুর জেলায় ১৫ লাখ গরু, দুই হাজার ৮’শ ২৭টি মহিষ, ৯ লাখ ৩৩ হাজার ছাগল ও ১ লাখ ৩৩ হাজার ভেড়া রয়েছে। কিন্তু এসব গবাদিপশু’র জন্য প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে দিনাজপুরে মাত্র ১০ মেট্রিক টন গো-খাদ্য পাঠানো হয়েছে।পশুখাদ্য সঙ্কট মোকাবিলায় গো-খাদ্যদের ত্রাণ ও আর্থিক বরাদ্দ চেয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জরুরী ফ্যাক্সবার্তাও দিয়েছে দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্তৃপক্ষ।

বন্যায় প্লাবিত বানভাসী মানুষ এবং গবাদিপশু একই স্থানে আশ্রয় নিয়ে এখন একই সঙ্গে বসবাস করছে। মানুষের পাশাপাশি গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। তাই মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুর খাদ্য ত্রাণ হিসেবে চেয়েছে খামারি এবং প্রাণি সম্পদবিদরা।

(এসএএস/এসপি/আগস্ট ২০, ২০১৭)