আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্বশুরবাড়িতে ঘর অনেকগুলোই, কিন্তু একটাও শৌচাগার ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই পিপাসা উপেক্ষা করে পানি কম খেতেন সদ্য বিয়ের পিঁড়িতে বসা এক তরুণী। একটা একটা করে মিনিট গুনে অপেক্ষা করতেন সূর্যাস্তের। অন্ধকার নামলেই ছুটতেন মাঠের দিকে। বিয়ের পর টানা চার বছর এভাবেই কেটেছে তার।

কিন্তু আর পেরে উঠছিলেন না। শৌচাগার না বানানোর জন্য মাস কয়েক আগে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন তিনি। শুক্রবার ভারতের রাজস্থানের ভিলওয়ারার পারিবারিক আদালত স্বামীর এই আচরণকে ‘নিষ্ঠুরতার পরিচয়’ এবং ‘নারীজাতির অপমান’ বলে মন্তব্য করে স্ত্রী-র বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করেন।

টয়লেট না বানানোর এ ধরনের ঘটনায় ভারতে এই প্রথম বিবাহবিচ্ছেদ হলো। ২০১১ সালে ভিলওয়ারার এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। প্রথম থেকেই শ্বশুরবাড়িতে কোনও শৌচাগার ছিল না। পরিবারের সব সদস্যই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মাঠে যেতেন।

প্রথম দিকে পরিবারের অন্য নারীদের মতো তিনিও তাই করতেন। কিন্তু তা আর সহ্য হচ্ছিল না। এতে তিনি চূড়ান্ত অপমানিত বোধ করছিলেন। খোলা আকাশের নিজে শৌচকর্ম করতে আত্মমর্যাদায় বিঁধছিল তার। তাই বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামীকে বাড়িতে শৌচালয় বানিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু হাজার আকুতি-মিনতি করেও কাজ হয়নি। স্বামী তার কথা শোনেননি।

উপরন্তু এটাই গ্রামের রীতি এবং তাতে অপমানিত বোধ করার মতো কিছু নেই বলেও জানায় স্বামী। গ্রামের অন্যান্য নারীদের মতো তাকেও ফাঁকা স্থানে শৌচকর্ম করার জন্য জোর দিতে থাকেন। ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্বামীকে শৌচাগার তৈরির জন্য অনুরোধ করে যাচ্ছিলেন তিনি।

এতে কোনো কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন ওই তরুণী। ২০১৫ সালে তিনি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। টানা দু’বছর ধরে সেই মামলা চলে। সেই মামলারই রায় বের হয়েছে শুক্রবার। আনন্দবাজার।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ২০, ২০১৭)