শরীয়তপুর প্রতিনিধি : উজান থেকে নেমে আসা বানের পানিতে প্লাবিত হওয়া জেলার নিন্মাঞ্চলের প্রায় ৪০টি গ্রাম থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। গত ৪ দিনে পদ্মা নদীর সুরেশ্বর পয়েন্টে পানি স্থিতি অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু পদ্মা তীরের দুইটি উপজেলায় প্রায় ১২ কিমি এলাকা নিয়ে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। গত দুই মাসে নদী ভাঙ্গনে অন্তত ৪ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে তারে হাতে পর্যাপ্ত ত্রান সহায়তা রয়েছে। তালিকা অনুযায়ী সকল ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রান সরবরাহ করা হচ্ছে।

স্থানীয় ও শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গছে, গত ১৬ আগষ্ট থেকে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ইতিমধ্যে শরীয়তপুরে পদ্মা নদী তীরবর্তি জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদেরগঞ্জ উপজেলার নিন্মাঞ্চলের প্রায় ৪০টি গ্রামের শতাধিক বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছিল। নড়িয়া থেকে জাজিরা হয়ে ঢাকা যাওয়ার পাকা সড়কের জাজিরার পাঁচু খাঁর কান্দি এলাকা থেকে নড়িয়ার ঈশ্বরকাটি পর্যন্ত ৪-৫ কিলোমিটার পাকা সড়কের উপর পানি উঠে প্লাবিত ৮ দিন যাবৎ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পানি প্রবল তোড়ে রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। এদিকে নড়িয়ার রাজনগরের আন্ধারমানিক থেকে ঈশ্বরকাঠি সড়কেও ৩ কিলোমিটার পানিতে প্লাবিত হয়ে সড়ক যোগযোগ বন্ধ রয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি হয়নি। চার দিন যাবৎ একই মাত্রায় পানি বৃদ্ধি স্থিতি অবস্থায় রয়েছে। ৬৬ সেন্টি মিটার থেকে নেমে এসে ২২ সেন্টি মিটারে পদ্মায় পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে, জাজিরা উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও নড়িয়া উপজেলা ৩ ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত আছে। সরকারি হিসেব মতে এ পর্যন্ত জাজিরা উপজেলার পালেরচর, কুন্ডেরচর, বিলাশপুর ও জাজিরা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে আর নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর, ঘড়িষার ও কেদারপুর ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে ৩ হাজার ১ শত ৩৫টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। বেসরকারি হিসেব মতে এ সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। ইতিমধ্যে জাজিরা উপজেলা প্রশাসন জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ৩ শতটি পরিবারের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল এবং ৩ হাজার করে নগদ টাকা বিতরণ করেছেন। জাজিরা উপজেলা উপজেলা প্রশাসন ১ হাজার ২ শত ৭২ পরিবারের প্রত্যেককে ২ হাজার করে নগদ টাকা এবং ২০ কেজি করে খয়রাতি সাহায্যের চাল বিতরণ করেছন। এদিকে নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারানো ১ হাজার ৬ শত ৮০ পরিবারকে নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন ২০ কেজি করে চাল দিয়েছেন এবং মাত্র ৭২টি পরিবারকে ১ হাজার করে নগদ টাকা দিতে পেরেছেন বলে জানিয়েন জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেলা রহমতুল্লাহ এবং নড়িয়া উপজেণা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা আক্তার। তবে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন প্রয়োজনের তুলনায় এ ত্রান সহায়তা একবারেই অপ্রতুল ও নগন্য। ত্রান বিতরনে অনেক অনিয়মের কথা কথাও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

শরীয়তপুর জেলা দুর্যোগ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন জানান, এ পর্যন্ত ত্রান সহায়তা হিসেবে ১৫ লক্ষ নগদ টাকা, ৬ শত মেট্রিক টন চাল ও ৭ শত ৯৭ বান্ডেল ঢেউ টি বরাদ্দ দিয়েছে দূর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রনালয়। এগুলো উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বন্টন ও বিতরণ করা হচ্ছে। মন্ত্রনালয়ে আরো ত্রান সহায়তা ও নদগ অর্থ প্রাপ্তির জন্য চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, সরকারের হাতে যথেষ্ট ত্রান মজুদ রয়েছে।

(কেএনআই/এএস/আগস্ট ২৫, ২০১৭)