বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে দস্যুদের হাতে অপহৃত ৪০ জেলের মধ্যে ৫ জন ছাড়া পেয়েছে। কোষ্টগার্ডের অভিযানের কারণে পশুর নদী এলাকায় শনিবার ভোরে ৫ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে বনদস্যুরা দাবি কোষ্টগার্ডের।

এদিকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য জিম্মি জেলেদের মধ্যে কয়েকজনকে দস্যুরা সময় বেধে দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানায় জেলে-মহাজন সূত্র। দস্যুদের বেধে দেয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মুক্তিপণ না দিলে জিম্মি জেলেদেরকে মারধরসহ নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়েছে দস্যু বাহিনী। এদিকে মুক্তিপণের দাবিতে সুন্দরবনে দস্যুদের হাতে জেলে অপহরণের খবর গণমাধ্যম কর্মীদের দেয়ায় জেলে-মহাজনদের সাথে অশোভন আচরণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্য।
জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, কোস্ট গার্ডকে খবর দিলে কোন কাজ হয় না। তাদের অভিযানে অপহৃত জেলে উদ্ধারও হয় না। টাকা দিয়েই অপহৃতদের ছাড়িয়ে আনতে হয়। বৃহস্পতিবার অপহৃতদের মধ্যে কয়েকজনকে সময় বেধে দিয়ে শুক্রবার রাতে ছেড়ে দিয়েছে। সে সকল জেলেরা এখন টাকা পয়সা জোগাড় করে জিম্মিদের ছাড়িয়ে আনার প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছে। অনেক মহাজনও তাদের জেলেদের ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য দস্যুদের সাথে যোগযোগ করছে বলেও জানায় জেলেরা।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে সুন্দরবনের নন্দবালাসহ বিভিন্ন খালে জেলেদের আটকিয়ে রেখে দস্যুরা মুক্তিপণ আদায় করে জেলেদের একে একে ছেড়ে দিয়েছেন সে খবরও কি প্রশাসন জানেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলেরা। প্রশাসনকে আর কিভাবে জানাতে হবে। জেলেরা আরো বলেন, দস্যুরা ভয় পায় র‌্যাবের অভিযান, র‌্যাবকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অপহৃতদের উদ্ধারে তারা সহায়তা করার কথা বললেও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্য আমাদের বকাঝকা করে বলেন, সাংবাদিকদের কেন অপহরনের খবর জানানো হলো।
জেলেরা আরো বলেন, ‘সুন্দরবনে ডাকাতির ঘটনা ঘটলে আমরা তো আমাদের মহাজন, সাংবাদিক ও প্রশাসনকে জানাই। এটা কি আমাদের দোষ। সরকারকে রাজস্ব দিয়ে সাগর ও সুন্দরবনে যারা মৎস্য-বনজ সম্পদ আহরণ করে থাকে তাদের দেখার কি কেউ নেই এমন প্রশ্ন খেটে খাওয়া হাজারো জেলে ও তাদের পরিবারের।
মংলাস্থ কোষ্টগার্ডের পশ্চিমজোনের লে. কমান্ডার আলাউদ্দিন বলেন,‘ সুন্দরবনে জেলে অপহরণের খবর পেয়ে শুক্রবার বিকাল থেকে ৮-৯ টি স্পটে অভিযান চালানো হয়। এই অভিযোনের মুখে বনদস্যুরা ৫ জন জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে কতজন জেলেকে মুক্তিপনের দাবিতে অপহরণ করা হয়েছে তা এখনও পর্যন্ত সে তথ্য আমাদের আসেনি। বনবিভাগ ও কয়েকজন জেলেদের কাছ থেকে ৭-৮ জন জেলে অপরনের খবর পাওয়া যায়। অপহৃত জেলে উদ্ধারের ব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে’।
(একে/এএস/জুন ২৮, ২০১৪)