আহম্মদ ফিরোজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় বয়োবৃদ্ধ মা ও আপন ভাগ্নিকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে খুন করে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে শিশির নামের এক যুবক। ঘটনাস্থল থেকে মা সুন্দরী দাস ও ছয় বছরের আপন ভাগ্নি প্রিয়ন্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বোয়ালমারী থানা পুলিশ অভিযুক্ত শিশিরকে আটক করেছে। তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশী প্রহরায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার ভোরে বোয়ালমারী পৌর এলাকার কামারগ্রামে এ লোমহর্ষক খুনের ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।

খুনের ঘটনা স্বীকার করে শিশির সাংবাদিকদের জানান, ভোর রাতে তার মা ও ভাগ্নিকে ঘুমের ইনজেকশন দেয়া হয়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুজনেরই গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর শিশির নিজেই গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

স্থানীয়রা জানান, পৌর এলাকার কামারগ্রামের জনৈক বিভুতি ভুষণ সাহার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন শিশির ও তার পরিবার। শিশির বেঙ্গল বিস্কুট নামের একটি কোম্পানীতে চাকুরী করেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে তাদের অভিমত।

বোয়ালমারী পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর শেখ আজিজুর রহমান জানান, সকাল নয়টার দিকে খবর পেয়ে সেই বাড়িতে গিয়ে গলাকাটা অবস্থায় লাশ দুটি দেখতে পান তিনি। এসময় পুলিশকে খবর দেয়া হলে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে। মারাত্মক আহত অবস্থায় শিশির ঘরের মধ্যেই পড়ে ছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও সারা শরীরে রক্তাক্ত ছিল।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় শিশিরকে আটক করা হয়। তাকে পুলিশী প্রহরায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সে কিছুটা সুস্থ হলে তাকে আরো জিজ্ঞাবাসাদ করা হবে।

ওসি (তদন্ত) আরো জানান, শিশির ৬ মাস আগে বোয়ালমারীতে বিভুতি ভুষণ সাহার বাড়িতে ভাড়ায় উঠেন। সে তার মা ও ভাগ্নিকে নিয়ে বাসায় থাকতেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটতে পারে। শিশিরের বাড়ী যশোর জেলার কেশবপুরে বলে তিনি জানান। এদিকে, এ ঘটনা জানতে পেরে সকাল থেকেই অকুস্থলে জনতার ভিড় জমে।

(এফএ/এএস/আগস্ট ২৯, ২০১৭)