শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার শিধলকুড়া-ডামুড্যা সড়কের ধানকাঠি ইউনিয়নের ভাদুরীকান্দি এলাকায় সোমবার দুপুরে বিয়ের বরযাত্রীবাহী একটি বাস উল্টে খালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে তাজুল শিকদার (২৭) ও রুবেল বেপারী (২৫) নামে দুই জন নিহত হয়েছে । এ সময় আরো ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধানকাঠি ইউনিয়নের বিশ্বাস কান্দি গ্রামের হাবিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হোসেন হাওলাদারের সাথে প্রায় ২০ কিলোমিটার দুরে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের দড়িহাওলা গ্রামের নোয়াব আলী খানের মেয়ে সুফিয়া বেগমের বিয়ের তারিখ ছিল ১২ আগষ্ট সোমবার। সে অনুযায়ী ধানকাঠি থেকে প্রায় ২ শত জন বরযাত্রী সোমবার দুপুরে দেলোয়ারের শশুর বাড়িতে রওনা দেয়। তিনটি বাস, ২টি মাইক্রো বাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে চড়ে বরযাত্রীরা যাচ্ছিল। এস এম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি বাসে ৫৬ জন বরযাত্রী ছিল। এই বাসটি ভাদুরীকান্দি ব্রীজে উঠার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খালে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই দুই জন নিহত হয়।

এদিকে বিয়ের কনে সুফিয়ার বাড়িতে তার বাবা স্থানীয় প্রায় ১ হাজার মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন মেয়ের বিয়েতে। বিয়ে বাড়ির সব আয়োজনও সম্পন্ন হয়েছিল। আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন পর্ব চলছিল যথারীতি। ঠিক এমন সময় কনের বাড়িতে খবর পৌছে বরযাত্রীর গাড়ি দুঘর্টনার। মুহুর্তেই সব এলোমেলো হয়ে। নতুন বউ নিতে দেলোয়ার আর পৌছেনি শশুর বাড়ি। পন্ড হয়ে যায় সুফিয়ার বিয়ে।

ধানকাঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক পিন্টু বলেন, আমিও দেলোয়ারের বিয়ের বরযাত্রী হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলাম। একটি দুর্ঘটনায় সব কিছু ওলোট পালট হয়ে গেছে। কনের বাড়িতে আমাদের আর পৌছানো সম্ভব হয়নি। আমি চেষ্টা করবো অচিরেই একই বর-কনের বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে।

চিতলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা নোয়াব আলী খানের মেয়ের সাথে ধানকাঠির হাবিবুর রহমানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন এর বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল সোমবার। নোয়াব খান তার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষ্যে প্রায় ১ হাজার লোকের আপ্যায়নের আয়োজন করেছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনার কারনে বর না আসাতে বিয়ে পন্ড হয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করবো পরবর্তীতে এই বিয়ের কাজটি সুসম্পন্ন করতে।

ডামুড্যা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুব রহমান চৌধুরী বলেন, সোমবার দুপুরে বরযাত্রীবাহী বাস ধানকাঠি ইউনিয়নের ভাদুরী কান্দি এলোকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ সময় দুই জন বরযাত্রী নিহত সহ প্রায় ২০ জন বরযাত্রি আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। স্তানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

(কেএনআই/এএস/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭)