স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ও বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনসহ ২১ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।

সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে এসব দাবি তুলে ধরে দলটি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া ছাড়াও ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেয়।

এ নিয়ে ১৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ করল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া আজ বিকেল ৩টায় প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি।

সংলাপে লিখিত বক্তব্যে ন্যাপ জানায়, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আর একটি সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় আরেকটি সংসদ নির্বাচন হলে সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা কঠিন। অন্যদিকে শাসকগোষ্ঠী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিতর্কিত করায় সেনাবাহিনীই হচ্ছে জনগণের আস্থার জায়গা।

দলটি অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত, নির্বাচনে অবৈধ অর্থ, কালো টাকা ও পেশী শক্তির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, নিরপেক্ষ স্থানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটার ও প্রার্থীর এজন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, ভোট গণনা শেষে প্রার্থীর এজেন্টদের স্বাক্ষরসহ ভোটকেন্দ্রে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা।

এছাড়া ‘না’ ভোটের বিধান সংযুক্ত ও প্রবাসীদের ভোটাধিকার দাবি এবং ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি বাদ দেওয়ার দাবি জানায় ন্যাপ।

দলটির অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, মন্ত্রী-এমপিদের সুবিধা ও নিরাপত্তা বাতিল করে তা প্রার্থীকে দেওয়া, বিতর্কিত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা, গণমাধ্যম কর্মীদের সব কেন্দ্রে উম্মুক্ত প্রবেশাধিকার, স্বাধীন, স্বতন্ত্র ও ক্ষমতাবান সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, জনবল ও বাজেটের দিক থেকেও নির্বাচন কমিশনের জন্য সরাসরি প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল ও জোটসমূহের সারাদেশে প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচনের বিধান চালু, ভোটারের সংখ্যা অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকা পুনঃনির্ধারণ, আরপিওর অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক ধারাগুলো বাতিল, নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানো, নির্বাচনে দেশী-বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা যাতে নির্বিঘ্নে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন তা নিশ্চিত করা, জাতীয় নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমার বিধান চালু এবং প্রার্থী ও দলগুলোর নির্বাচনী আচরণবিধি পরিবর্তন করা।

সংলাপে ন্যাপের প্রতিনিধিদলে ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার মশিউর রহমান গাণি, ভাইস চেয়ারম্যান মুনির ইনায়েত মল্লিক, মো. ফারহানুল হক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ শাহজাহান সাজু, স্বপন কুমার সাহা, মো. নুরুল আমান চৌধুরী, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মো. শহীদুননবী ডাবলু, মো. কামাল ভূঁইয়া, মতিয়ারা চৌধুরী মিনু।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে ইসি। গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। পরে গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়েছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭)