মাগুরা প্রতিনিধি : বাবার সাথে দেখা করতে যাওয়া অভিযোগে মাগুরা শহরের পুরাতন বাজার মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায় দুই শিক্ষক দড়ি দিয়ে পিছমোড়া বেধে মারপিট করেছে ১২ বছরের এক ছাত্রকে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন নিয়ে আলফাজ উদ্দিন (১২) নামের ওই শিশুটিকে গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আলফাজ সদর উপজেলার রায়গ্রাম এর আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে। আলাউদ্দিন একটি কুরিয়ার সার্ভিসের অফিসের কর্মচারি।

শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানের নির্যাতনের চিহ্ন দেখিয়ে আলাউদ্দিন মিয়া জানান, ছেলেকে হাফেজ তৈরীর আশায় ৪ মাস আগে তাকে ওই মাদ্রাসায় দেয়া হয়। সেখানে পড়াকালিন সময়ে সে মাঝে মধ্যে শহরের ঢাকা রোডে তার অফিসে দেখা করতে আসে। তিনি নিজে গিয়ে অথবা ফোন দিয়ে ছেলেকে পাঠিয়ে দেন। শনিবার বিকেলে তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে দেখতে পান ছেলে কান্নাকাটি করছে। এ সময় তার কাছে শিক্ষকদের নির্যাতনের বর্ণনা শুনেন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকদের নির্যাতনে চিহ্ন দেখে তিনি তাকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে শিশু আলফাজ উদ্দিন জানান, মাদ্রাসা থেকে গিয়ে বাবার সাথে দেখা করার কারণে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো ইমরান এবং ওস্তাদ ফবিরুল্লাহ তাকে পিঠমোড়া দিয়ে দড়ি দিয়ে বেধে মারপিট করতেন। তাদের মারের চোটে তার পিঠ, হাত, উড়ু ও পশ্চাতদেশে কালো দাগ পড়ে গেছে। আবারও মারের ভয়ে সে বিষয়টি কাউকে বলতে পারতো না।

অভিযুক্ত শিক্ষক মো: ইমরান জানান, প্রায়ই ছেলেটি মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যেত। বুধবার সে না বলে তার বাবার কাছে চলে যাওয়ার পর তাকে নিয়ে এসে সামান্য শাসন করা হয়েছে। তাকে দড়ি দিয়ে পিছমোড়া দিয়ে বাঁধার ঘটনা স্বীকার করে তিনি এ ঘটনাটিকে ভুল হিসেবে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য আলাউদ্দিন এর কাছে অনুরোধ জানান। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ছেলেটির চিকিৎসার খরচ বহন করার প্রস্তাব দেয়া হয়।

মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অমর প্রসাদ বিশ্বাস জানান, শিশুটির শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। আমরা তাকে ভর্তি করে নিয়েছি। তার চিকিৎসা চলছে।

এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ হোসেন জানান- শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

(ডিসি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭)