চাঁদপুর প্রতিনিধি : হাজীগঞ্জে কাভার্ড ভ্যান সিএনজি স্কুটার ও জ্বালানী তেলবাহী লরির ত্রিভূজ সংঘর্ষে নূহা (২) নামের ১ শিশু নিহত অপর ৫ জন আহত হয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ধেররা তালুকদার বাড়ির সামনে। পুলিশ ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যান ও সিএনজি স্কুটারকে ঘটনাস্থল থেকে ও তেলবাহী লরিকে চাঁদপুর শহরতলীর ওয়্যারলেস বাজার এলাকা থেকে আটক করেছে।

এদিকে আহত নিহত সকলে একই পরিবারের সদস্য হওয়ার কারণে ঐ পরিবার পরিজনে চলছে শোকের মাতম। আহত নিহত সকলে সিএনজি স্কুটারের যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর থেকে প্রায় ১ ঘন্টা ধরে বন্ধ ছিলো চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের যান চলাচল।

দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কচুয়া এলাকার বাসিন্দা ও ধেররা এলাকায় স্ব-পরিবারে বসবাসকারী সফিকুল ইসলাম জানান, আমি জোহরের নামাজ পড়তে ঘটনাস্থলের একটু দুরে মসজিদে যাওয়ার সময় ঘটনাটি ঘটে। একটি তেলের ট্রাক হাজীগঞ্জ থেকে চাঁদপুর যাওয়ার পথে এসএস কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ড ভ্যানের পিছনে দিকে আঘাত করলে কাভার্ড ভ্যানটি ঘুরে গিয়ে সড়কের বিপরীতে নেমে যাওয়ার সময় সিএনজি স্কুটারদিকে চাপা দেয়। ঘটনার পর পর সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার পর পুলিশ এসে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

এ ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলার বাকিলা বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী অমল ধর বলেন, আমাদের সামনে ঘটনাটি ঘটে। সাথে সাথে আমরা আমাদের বাস থেকে সবাই নেমে একত্রে মিলে কুরিয়ার সার্ভিসের বড় ভ্যানটিকে ধাক্কা দিয়ে সিএনজি স্কুটারটিকে সরিয়ে দেই। এরপরেই দুমড়ে মুছড়ে যাওয়া স্কুটারের ভেতর থেকে আহত সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।

আহতরা হলেন, উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের বশির গাজীর ছেলে শাখাওয়াত হোসেন (২৫), মেয়ে তানিয়া আক্তার (২৩), নাতিন সানজিদা আক্তার (৮) ও নূহা আক্তার (২), সিএনজি স্কুটার চালক পৌরসভাধীন মকিমাবাদ গ্রামের মৃত রওশন আলীর ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান (৪০)। শাখাওয়াত হোসেন ছাড়া গুরুতর আহত ৪ জন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আহত তানিয়া উপজেলার কালোচোঁ উত্তর ইউনিয়নের তারাপাল্লা প্রধানিয়া বাড়ির আবুল বাসারের স্ত্রী। স্বামীর বাড়ি থেকে বাবা বাড়ি উপজেলার বাকিলা এলাকার গাজী বাড়িতে যাওয়ার পথে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে।

নিহত নূহার চাচাতো মামা মিজানুর রহমান গাজী কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মুঠোফোনে জানান, নূহাকে কুমিল্লা আনার পথেই মারা যায়। আর তার বড় বোন সানজিদা মা তানিয়া মিলিয়ে সকলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আহত শাখাওয়াতের বাবা বশির গাজী জানান, আমার ছেলে শাখাওয়াত আমার মেয়ে তানিয়াকে তার স্বামীর বাড়ি উপজেলার কালচোঁ ইউনিয়নের তারাপাল্লা প্রধানিয়া বাড়ি থেকে ২ নাতনি সানজিদা ও নূহাকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসার পথে এ ঘটনার শিকার হয়।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ মোহাং জাবেদুল ইসলাম জানান, শিশু নিহতের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, দূর্ঘটনায় কবলিত কার্ভাড ভ্যান, সিএনজি স্কুটার এবং তেলের লরিকে আটক করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কেউ এখনো অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

হাজীগঞ্জের ধেররায় দুর্ঘটনায় কাভার্ড ভ্যানটি এভাবেই সড়কের উপর পড়ে থাকে, দুমড়ে মুছড়ে যাওয়া স্কুটার ও যান চলাচল বন্ধের একাংশ।

(ইউএইচ/এএস/সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭)