রাজন্য রুহানি, জামালপুর : দেশের বৃহৎ ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনার সার কারখানা থেকে সার নিতে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণাধীন কারখানা এলাকায় গড়ে ওঠা ট্রান্সপোর্ট সমিতিকে দিতে হয় বছরে প্রায় ২ কোটি টাকা। ৩টি সমিতিকে এই টাকা দিতে হয় ডিলারদের। দৈনিক সাড়ে ১৭শ মেট্রিক টন উৎপাদনক্ষম এই কারখানা থেকে ডিলারদের মাধ্যমে জামালপুর, শেরপুর ও উত্তরবঙ্গসহ ১৯ জেলায় সার সরবরাহ করা হয়।

যমুনা সার কারখানাকে ঘিরে তারাকান্দি এলাকায় গড়ে ওঠা ৩টি সমিতি হলো তারাকান্দি ট্রাক ও ট্যাঙ্কলড়ি মালিক সমিতি, তরল এ্যামুনিয়া গ্যাস সমবায় সমিতি ও ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সমিতি। এই ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সমিতির মাধ্যমে ১৯ জেলার ডিলারদের বস্তা প্রতি দুই থেকে আড়াই টাকা খরচ করে সার উত্তোলন করতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার তালিকাভুক্ত বিসিআইসির একাধিক ডিলার জানিয়েছেন, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সমিতির মাধ্যমে সার উত্তোলন করতে হয় তাদের। এজন্য জামালপুর জেলার ডিলারদের বস্তা প্রতি ২ টাকা এবং জেলার বাইরে অন্য জেলার ডিলারদের বস্তা প্রতি আড়াই টাকা হিসাবে সমিতিতে জমা দিতে হয়। এই টাকা থেকে অর্ধেক নেয় ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মালিক বাকি অর্ধেক টাকার ভাগ দিতে হয় তারাকান্দি ট্রাক ও ট্যাঙ্কলড়ি মালিক সমিতিকে। যমুনার সার কারখানার নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে যমুনা সার কারখানা থেকে ১৯ জেলায় ৪ লাখ ৫ হাজার ৮৮২ মেট্রিক টন যা ৮১ লাখ ১৭ হাজার ৬৪০ বস্তা সার সরবরাহ করা হয়েছে। এতে ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সমিতিতে ২ কোটি টাকার উপরে ডিলারদের জমা। তারাকান্দি ট্রাক ও ট্যাঙ্কলড়ি মালিক সমিতির সভাপতিই ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সমিতি সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির সভাপতি মো. বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, ডিলারদের সার উত্তোলনের জন্য বস্তা প্রতি আড়াই টাকা জমা নেওয়া হয়। জমাকৃত টাকার অর্ধেক মালিক সমিতিতে জমা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি টাকা জমা নেওয়ার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, কর্মচারীর বেতনসহ আনুষঙ্গিক নানা খাতে এই টাকা খরচ করা হয়।

(আরআর/এএস/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭)