E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

মিরসরাই ট্র্যাজেডির তিন বছর

ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত ওরা

২০১৪ জুলাই ১২ ১২:১৫:৪৫
ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত ওরা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : শোক আর অশ্রুজলে মিরসরাইয়ে নিহত স্কুল শিক্ষার্থীদের স্মরণ করল স্বজন, সহপাঠি এবং আবুতোরাবের সর্বস্তরের মানুষ।

শুক্রবার আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিহতদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ আবেগে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শোক র‌্যালি, স্মরণসভা এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হলো মিরসরাই ট্র্যাজেডির তৃতীয় বার্ষিকী।
শুক্রবার সকালে স্মৃতিস্তম্ভ আবেগে ফুল দিয়ে একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির পক্ষে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আতাউর রহমান, শ্রদ্ধা জানান মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলাহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াসমিন শাহীন কাকলী, চেয়ারম্যান কবির নিজামী, শাহীনুল কাদের চৌধুরী, আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাফর ছাদেক, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সরওয়ার, মিরসরাই উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস হোসেন আরিফ, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, নিহতদের বাবা মা এবং স্বজনরা।
স্মৃতিস্তম্ভ আবেগে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নিহতদের স্বজনরা স্মৃতিস্তম্ভে নিজের সন্তানের ছবির দিকে নির্বাক তাকিয়ে থাকেন। স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠিদের শোকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
সেই সড়ক দুর্ঘটনায় সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, দুর্ঘটনার তিনবছর পার হয়ে গেলেও আজো একদিনের জন্যও ভুলতে পারিনি সে দুঃসহ স্মৃতির কথা।
মেহিদী এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুর্ঘটনার পর আমাদের স্কুল সরকারি করণের ঘোষণা দিয়ে গেলেও আজো তা সরকারি করা হয়নি।
নিহত স্কুলশিক্ষার্থী আশরাফ উদ্দিনের বাবা নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার ছেলের শোক আজো ভুলতে পারিনি। স্মৃতিস্তম্ভ আবেগের কাছাকাছি এলেই প্রিয় সন্তানের ছবি দেখে শোকে কাতর হয়ে যাই প্রতিনিয়ত।
জুয়েল শীলের মা নিলীমা বলেন, প্রিয় সন্তান হারানোর যন্ত্রনা আজো বয়ে বেড়াচ্ছি।
আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাফর সাদেক বলেন, মিরসরাই ট্র্যাজেডিতে যে ক্ষতি হয়ে গেছে তা কোনো দিন পূরণ হওয়ার নয়।
তিনি প্রশাসনের কাছে আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয় সরকারি করণের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১১ জুলাই সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের ফাইনার খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া-আবুতোরাব সড়কের দক্ষিণ সৈদালী এলাকায় ৭০-৮০ কিশোর বহনকারী একটি মিনিট্রাক পাশের ডোবায় উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই এক সঙ্গে ৩৮ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। সেসময় নিজ ছেলের মৃত্যু হয়েছে ভেবে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে এক অভিভাবকও মারা যান।
পরবর্তীতে ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর জুয়ের শীলের মৃত্যু পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যু গুণতে হয়েছে। যাদের ৪৩ জনই ছিল শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৪ জন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারজন, আবুতোরাব ফাজিল মাদরাসার দুজন, প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের দুজন, একজন অভিবাবকসহ অপর দুজন মারা যায়। যেটি ইতিহাসের পাতায় মিরসরাই ট্র্যাজিডি হিসেবে স্থান করে নেয়।
(ওএস/এএস/জুলাই ১২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০২ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test