E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

শিরোনাম:

ভাঙ্গায় গম নিয়ে কারসাজি

সরকার নির্ধারিত গমের দাম পাচ্ছে না কৃষকরা

২০১৪ এপ্রিল ১৭ ১৭:৪৪:০৯
সরকার নির্ধারিত গমের দাম পাচ্ছে না কৃষকরা

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ভাঙ্গায় এবার গমের আবাদ ভাল হয়েছে। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে গম কেনার ঘোষণা দিলেও ভাঙ্গার কৃষকরা সরকার নির্ধারিত গমের দাম পাচ্ছে না। একটি চক্র উপজেলা খাদ্য বিভাগকে ম্যানেজ করে বাজার থেকে কম দামে গম ক্রয় করে খাদ্য গুদামে ঢুকাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেক গম গুদামে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ক্রয় করে ঢুকান হয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় ভাঙ্গার গম ক্রয়ের অনিয়ম নিয়ে আলোচনা ওঠায় জেলা খাদ্য বিভাগ ঐ দিন থেকেই ভাঙ্গায় গম ক্রয় স্থগিত করেছে।

উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে এ বছর ভাঙ্গা থেকে ১৮০২টন গম কেনার কথা। সরকার প্রতি কেজি গম ২৭ টাকা করে নির্ধারণ করেছেন। এ হিসাবে প্রতিমণ গমের মূল্য ১০৮০টাকা। ক্রয়ের সময় গত ১ এপ্রিল থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত।
কিন্ত গত কয়েকদিনে ভাঙ্গার বিভিন্ন হাট বাজারে খবর নিয়ে জানা যায়, ভাঙ্গার কৃষকরা হাট বাজারে ৮শত থেকে সাড়ে ৮শত টাকা মন দরে গম বিক্রি করছে।
একাধিক কৃষক জানায়, আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে গম বিক্রি করছি। কারণ সরকারী ভাবে আমাদের গম কিনছে না। প্রতি কৃষককে খাদ্য গুদামের সিল লাগানো বস্তা সরবরাহের কথা থাকলেও তা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয় নাই। সরকারী গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত বস্তা আনতে গেলে উনি বস্তা না দিয়ে তাল বাহানা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ১৩ এপ্রিল রাতের বেলা শতাধিক টন গম ট্রাক ও পিকআপ ভরে খাদ্য গুদামে ঢুকাতে গেলে সাধারণ জনগন ও কৃষকরা খাদ্য গুদাম ঘেরাও করে। এক পর্যায়ে গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গম ফেরত পাঠায়।
ভাঙ্গার কালামৃধা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান কালু বলেন, আমারা যারা কৃষক তাদের কাছ থেকে গম উপজেলা খাদ্য বিভাগ কিনছে না। তারা একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গম কিনে প্রতিমন গমে ২০০ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে।
ভাঙ্গার ঘারুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন অভিযোগ করেন, সিন্ডিকেট ও উপজেলা ক্রয় কমিটি এবার অর্ধকোটি টাকার উপরে বানিজ্য করবে। ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হবে কৃষক। সরকারের উদ্দেশ্য ব্যহত হবে।
ভাঙ্গার ঘারুয়া গ্রামের আবুল কালাম, মাধবপুর গ্রামের কাওছার কাজী অভিযোগ করে বলেন, আমাদের গ্রামের কেউই সরকারী ভাবে গম বিক্রি করতে পারেনি।
ভাঙ্গা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা এ পর্যন্ত ৮৪০টন গম ক্রয় করেছি। ক্রয়ে কোন অনিয়ম হয়নি। গুদামে জায়গা সংকটের কারণে গম ক্রয় স্থগিত রয়েছে।
ফরিদপুর জেলা খাদ্য কর্মকর্তা আবু নাইম মো. শফিউল হক বলেন, ভাঙ্গা কেন্দ্রে গম কেনায় অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ঐ কেন্দ্রে গম ক্রয় স্থগিত হয়েছে। এব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় ভাঙ্গা কেন্দ্রের গম ক্রয়ের অনিয়ম নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী আসাদুজ্জামান কবির বলেন, ভাঙ্গায় গম কেনা নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে না। আমরা কৃষকদের কাছ থেকে গম কিনছি। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা গম দিতে চাচ্ছে। কিন্তু আমরা নিচ্ছি না। এই কারণে তারা বিভিন্ন রকম প্রপাকাণ্ডা ছড়াচ্ছে।

(এডি/এএস/এপ্রিল ১৭, ২০১৪)




পাঠকের মতামত:

০২ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test