E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মেঘনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে পাঙ্গাস

২০২১ অক্টোবর ৩১ ১৫:৫৭:২৯
মেঘনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে পাঙ্গাস

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে মৎস্য আহরনের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পর মেঘনায় ইলিশের আকাল দেখা দিলেও জেলেদের জালে ধরা পরছে ঝাঁকে ঝাঁকে পাঙ্গাস মাছ। গত কয়েকদিন থেকে বরিশালের ইলিশ মোকামের আড়তগুলোতে পাঙ্গাসের অধিক্য আড়তদারদের নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে। একইসাথে নদীতে ইলিশ মাছ না পেলেও ঝাঁকে ঝাঁকে পাঙ্গাস মাছ ধরা পরায় জেলেদের মুখে হাসি ফুঁটেছে। বরিশালের মাছের আড়তে বিপুল সংখ্যক নদীর পাঙ্গাস নিয়ে আসছেন জেলেরা।

রবিবার সকালে নগরীর মৎস্য অবতরন কেন্দ্রের ঘাটে ট্রলারযোগে পাঙ্গাস মাছ নিয়ে আসা জেলে ইয়াসিন হাওলাদার বলেন, ভোলার পূূর্বপাশে ভাটি মেঘনা আর পশ্চিমের তেঁতুলিয়া নদীর ভাটিতে সাগর মোহনা থেকে এসময়ে যে পরিমান ইলিশ উজানে উঠে আসার কথা, তার যথেষ্ঠ ঘাটতি রয়েছে। এরইমধ্যে জেলেদের মুখে হাসি ফুঁটিয়েছে নদীতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পরায়। তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিনে ধরে ভোলার উজানে চাঁদপুরের ভাটিতে হিজলা সংলগ্ন মেঘনা ও তার শাখা নদ-নদীগুলোতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পরছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন থেকে দশ কেজি ওজনের এসব মাছ নদীতে তিন থেকে পাঁচশ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও আড়তে আসার পর দুই-তিন হাত ঘুরে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে আটশ’ টাকা কেজি দরে।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, শীতের সময় মেঘনা ও তার শাখা নদ-নদীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পরে। এবার তা কিছুটা আগেই মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ভাটি থেকে উজানে চলে এসেছে। এমনকি গবেষণায় ২০১৯ সালে ইলিশের মূল প্রজননকালীন ২২ দিনে দেশের প্রধান ইলিশ প্রজননক্ষেত্র সমুহে পরীক্ষামূলক নমুনায়নে ৮৩% ইলিশের রেনুর সাথে ১৭% অন্যান্য মাছের রেনু পোনাও পাওয়া যায়। ফলে ইলিশ আহরন নিষিদ্ধকালীন ২২ দিনে উপকূলে অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন স¤পন্ন হচ্ছে। যা দেশে অন্যান্য প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। এবার নদ-নদীতে গত কয়েকদিনের পাঙ্গাসের আগাম বিচরনকে অত্যন্ত ভাল লক্ষ্যন মনে করে সহনীয় আহরনের উপর গুরুত্ব দিতে চান মৎস্য বিজ্ঞানীগণ।

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ইলিশ প্রজননের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন বৃদ্ধি পাওয়ায় নদ-নদীতে শুধু পাঙ্গাস নয়; বিভিন্ন মাছেরও প্রাচুর্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত ভাল লক্ষ্যন বলেও তিনি মনে করেন।

নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পরেও নদ-নদীতে ইলিশের প্রাচুর্য কিছুটা কম থাকার বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, অভিপ্রয়াণী মাছ ইলিশ জীবনচক্রে স্বাদু পানি থেকে নোনা পানিতে এবং সেখান থেকে পুনরায় স্বাদু পানিতে অভিপ্রয়ান করে। উপকূলের সাত হাজার বর্গ কিলোমিটারের মূল প্রজনন ক্ষেত্রে মুক্ত ভাসমান অবস্থায় ডিম ছেড়ে বেশীরভাগ ইলিশই আবার সাগরের নোনা পানিতে বিচরন করে। সুতরাং প্রজননের এ সময়ে দেশের অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে ইলিশের বিচরন অনেকটা সীমিত থাকা স্বাভাবিক বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ৩১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test