E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সাপাহারে অভিনব প্রতারণার ফাঁদে ৩৬২ পরিবার! 

২০২১ নভেম্বর ০১ ১৭:৪৬:৪৯
সাপাহারে অভিনব প্রতারণার ফাঁদে ৩৬২ পরিবার! 

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর সাপাহার উপজেলার নিভৃত পল্লীতে  গ্রামে গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে একটি প্রতারক চক্রের ২সদস্য। জয়পুরহাট জেলার জামালগঞ্জ টিকানায় জনতা মুরগী ফার্ম এন্ড হ্যাচ্যারী নামে ব্যানার ব্যবহার করে লোকজনকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন তারা।

জানা গেছে, গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মনির হোসেন ও তার এক সহযোগী সাপাহার উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল পিছলডাঙ্গা গ্রামে আসেন এবং তারা জনতা মুরগী ফার্ম এন্ড হ্যাচারী থেকে এসেছেন বলে তাদের পরিচয় প্রকাশ করেন।

ওই এলাকার ভুক্তভোগী অসংখ্য নারী পুরুষরা জানান, তারা প্রতিটি গ্রাম হতে একজন করে নারী পুরুষকে নেতা-নেত্রী নিযুক্ত করেন এবং প্রথমে তাদেরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন। পরে তাদেরকে সাথে নিয়ে একটি পরিবারে সহজ কিস্তিতে ৫শ’টি ডিম পাড়া ২০টি করে মুরগী এবং মুরগীর বাস যোগ্য একটি করে ঘর প্রদান করা হবে বলে প্রতারণা ফাঁদের বিস্তার ঘটায়। এর পর দু’ একজন নেতা নেত্রীকে ১০টি করে মুরগীও প্রদান করেন তারা। সুযোগ বুঝে পরে তারা তাদের হ্যাচারী ফার্মের একটি কাগজে মুরগীর ঘর বাবদ নগদ ৫০০ করে টাকা আদায় করে।

পরে মুরগী প্রদান করা হবে বলে পিছলডাঙ্গা গ্রামের ৪৪জনের কাছ থেকে ২২হাজার টাকা, সিংগাহার গ্রামের ২০ জনের কাছ থেকে ১০হাজার টাকা, মধ্যপাড়া গ্রামের ২৫জনের কাছ থেকে ১২হাজার ৫শ” টাকা, পোকড়াহার গ্রামের ৪০জনের কাছ থেকে ২০হাজার টাকা, ধর্মপুর গ্রামের ১শ’জনের কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা, মলপাড়া গ্রামের ৪০জনের কাছ থেকে ২০হাজার টাকা, বিদ্যানন্দী গ্রামের ৪০ জন সদস্যের কাছ থেকে ২০হাজার টাকা এবং শাহাবাজপুর গ্রামের ১শ’জনের কাছ থেকে ৫০হাজার টাকাসহ সর্বমোট ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা গ্রহণ করে মুরগী দেবার কথা বলে প্রত্যেক সদস্যের নিকট ০১৭৩৮-৩৬৪২৩৭ ও ০১৭১৭-৩৮০৪৩৯ মোবাইলে যোগাযোগ করার কথা বলে চম্পট দেয়। ২০অক্টোবর টাকা আদায় করে ২১অক্টোবর তাদের দেয়া ফোনগুলি খোলা থাকলেও রহস্যজনকভাবে ২২অক্টোবর থেকে প্রত্যেকের ফোনগুলি বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর থেকে অদ্যাবধি কোন গ্রাহকই আর তাদের সাথে কোন রকম যোগাযোগ করতে না পারায় বিষয়টি এলাকায় জানা জানি হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানার পর পিছল ডাঙ্গা গ্রামের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য দেলোয়ার হোসেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো: আকবর আলীর সাথে কথা বলেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পূর্বেই চতুর প্রতারকদ্বয় এলাকা থেকে পালিয়ে অন্যত্র গা ঢাকা দেয়। এবিষয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আলমামুন বিয়টি জানেননা কিংবা কেউ তাঁকে জানায়নি বলে জানান।

তবে কেউ তাকে জানালে সাথে সাথে তিনি ওই প্রতারকদ্বয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান। তবে এসব বিষয়ে গ্রামের মানুষদের তিনি সচেতন হতে বলেন। গ্রামে কোন প্রতারক চক্রের সদস্য প্রবেশ করলে কিংবা অচেনা কোন লোককে সন্দেহ মনে হলেই গ্রামবাসীদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থ্যার সাহায্য নিতে পরামর্শ দেন তিনি। অসহায় গ্রামবাসী প্রতারণার শিকার হয়ে এখন হাহুতাশ করছে। এই প্রতারকদের কোথাও দেখলে ধরিয়ে দেয়ার জন্য সবার প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন তারা। উল্লেখ্য ওই প্রতারকদ্বয় সাপাহার উপজেলার আরোও বেশ কয়েকটি গ্রামে এবং পোরশা উপজেলার কয়েকটি গ্রামেও একই কায়দায় প্রতারণার ফাঁদ পেতে অসংখ্য নারী পুরুষের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

(বিএস/এসপি/নভেম্বর ০১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test