E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

লক্ষ্মীপুরে সিভিল সার্জনের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

২০২১ ডিসেম্বর ০৫ ১৮:২৫:৪৭
লক্ষ্মীপুরে সিভিল সার্জনের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়াই এক প্রসূতির অপারেশন করায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসক সিভিল সার্জন আব্দুল গাফফারের অবহেলায় এ প্রসূতির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন নিহতের স্বজনরা। শনিবার বিকেলে শহরের নিউ আধুনিক হাসপাতালে (প্রাইভেট) এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ স্বজনরা সন্ধ্যায় হাসপাতালের দরজা জানালা ভাঙচুর করে প্রতিবাদ জানান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত প্রসুতির নাম শিমু আক্তার। তিনি সদর উপজেলার শাকচর গ্রামের সরকারি কর্মচারী লাভলুর স্ত্রী। তবে তার নবজাতক সন্তান সুস্থ আছে বলে জানা যায়।

স্বজনরা জানান, লাভলুর স্ত্রী শিমুর প্রসব ব্যাথা উঠলে প্রথমে তাকে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে নিয়ে যান স্বজনরা। পরে আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে শিশুর অবস্থান উল্টো থাকায় তাকে দালালের মাধ্যমে নিউ আধুনিক প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিকেল ৩ টার দিকে তার সিজার করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এসময় সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গাফফার প্রসূতিকে অস্ত্রপাচার করেন। কিছুক্ষন পর একটি একটি নবজাতককে স্বজনদের কোলে তুলে দেয়া হয়। এরপর অন্য এক প্রসূতিরও অস্ত্রপাচার করেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু প্রসূতি শিমুর অবস্থা সম্পর্কে পরিবারের কাছে লুকোচুরি করতে থাকেন সবাই।

এসময় তাদের সন্দেহ হলে শিমু স্ট্রোক করেছে জানিয়ে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে বিকেল ৫টার দিকে কুমিল্লায় রেফার্ড করে দেন। পরে শিমুর মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন পরিবার। খবর পেয়ে শিমুর স্বজনরা হাসপাতালে ভাঙচুর (দরজা-জানালা) চালায়। পরে শহর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় হাসপাতালের একটি কক্ষে তালা লাগিয়ে স্বজন পরিচয়ে রাশেদসহ একাধিক লোক সমঝোতার বৈঠকে বসেন। কিন্তু রহস্যে ঘেরা সমঝোতার বৈঠকে কোন তথ্য না মিললেও নিহতের বাড়ীতে গিয়ে দেখা গেছে চলছে শোকের মাতম।

এসময় নিহতের মা জেসমিন ও খালাতো বোন শিউলি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় ও চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়াই অপারেশন করায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। একই সঙ্গে সিভিল সার্জন সার্জারী না হয়েও অপারেশন করানো আর সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয়ে প্রশ্ন তোলে এ ঘটনার বিচার দাবিকরেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রেসার বেড়ে রোগী স্ট্রোক করে মারা গেছে। অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ইকবাল ও নাছিম নামে দুইজন ছিলেন অপারেশন থিয়েটারে। ঘটনায় সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ ৩ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করেন সিভিল সার্জন।

এদিকে জানতে চাইলে অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ইকবাল বলেন, তিনি ওই সময়ে সদর হাসপাতালেই দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

অপর দিকে সিভিল সার্জনের ভাষ্যমতে তদন্ত কমিটির প্রধান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন ঘটনা সম্পর্কে অবহিত নন বলে জানান।

(এসএস/এএস/ডিসেম্বর ০৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

৩১ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test