E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

রোভার স্কাউটের লিডার বেসিক কোর্স

কোর্স করলেন শাহিন সনদ পেলেন কামরুল! 

২০২২ এপ্রিল ১৫ ১৬:৪০:৫০
কোর্স করলেন শাহিন সনদ পেলেন কামরুল! 

তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের ইউনিট লিডার বেসিক কোর্সে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জ জেলা রোভার লিডার ও সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক গোলাম মোস্তাফার বিরুদ্ধে। আগামী ২০ এপ্রিল গোপালগঞ্জ জেলা রোভার সপ্তম ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিলে নিজের ভোট বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এ জালিযাতির আশ্রয় নেন বলে এ অভিযোগ উঠেছে।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের উদ্যোগে গোপালগঞ্জ জেলা রোভারের ব্যবস্থাপনায় গোপালগঞ্জ জেলা শিশু একাডেমিতে ৩৫২-তম রোভার স্কাউট ইউনিট লিডার বেসিক কোর্স অনুষ্ঠিত হয়। কোর্সটিতে প্রশিক্ষণের জন্য জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠিানের ২৪ জন শিক্ষক অংশ গ্রহন করেন। কোর্স শেষে তাদের সনদ প্রদান করে রোভার অঞ্চলের আঞ্চলিক উপ কমিশনার (প্রশিক্ষন) ও ওই কোর্সের কোর্স লিডার সিকদার রুহুল আমিন (এলটি) ।

জানা যায়, ওই কোর্সে অংশগ্রহনকারিদের ২৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেলা শিশু একাডেমিতে অবস্থান করে কোর্সটি শেষ করতে হয়েছে।ওই কোর্সে কোটালীপাড়া উমাচরন সার্বজনিন উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও সদর উপজেলার ডা. দেলোয়ার হোসাইন মেমোরিয়াল কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক হাফিজুর রহমান নামে সনদ দেওয়া হয়। অথচ ওই দুই জন শিক্ষক কোর্সে না এসেই তাদের নামে সনদ পেয়েছেন ।

পরর্বর্তিতে অনুসন্ধানে জানাযায়, গোপালগঞ্জ জেলা রোভার লিডার ও সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক গোলাম মোস্তাফা সহকারি লিডার প্রশিক্ষক (এএলটি ) টাকার বিনিময়ে ওই দুই শিক্ষকের নাম দিয়ে শাহিন ফকির ও খালিদ হোসেন নামের দুইজন যুবক দিয়ে কোর্সটি সম্পন্ন করান। যা কোর্সে অন্য প্রশিক্ষকদেও জানতে দেয়া হয়নি।

কোর্স শেষে ওই দুই যুবক (শাহিন ফকির ও খালিদ হোসেন) আপেক্ষ করে বলেন, কষ্ট করে কোর্স করলাম আমরা, কিন্ত নিজের নামে সনদ পেলামনা ।

বিষয়টি জানতে শাহিন ফকিরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গোলাম মোস্তফা স্যার আমাকে কোর্স করার জন্য বলেন । কোর্স ( নিবন্ধনের সময় ) চলাকালিন সময় সে আমাকে বলেন তোমার নামের পরিবর্তে কামরুল ইসলামের নাম ও ঠিকানা লিখে দিতে। আমি তাই করেছি। কারণ স্যার আমাকে একটা উপকার করেছিলো “ আমার এক বন্ধু তার এম,এ পরীক্ষার সময় চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছিলেন।ওই পরিক্ষায় সে অংশ গ্রহন করতে পারেনি কিন্ত গোলাম মোস্তফা (জি এম স্যার) তার স্থানে অন্য লোক দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে তাকে পাশ করিয়েছিলেন ।”তিনি আমার পরিচিত অন্যদেরও এমন অনেক সাহায্য করেছেন। সেজন্য তার প্রতি আমি দূর্বল ছিলাম ।

এ বিষয় জানতে কোটালীপাড়া উমাচরন সার্বজনিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বিদ্যালয়ে চাকরি করি আমার পক্ষে পাঁচ দিন ধরে সেখানে অবস্থান করে প্রশিক্ষন নেওয়া সম্ভব নয়। মোস্তফা স্যার আমাকে প্রশিক্ষণে উপস্থিত থাকলে বলেছিলেন। কিন্তু আমি যাইনি। আমার নামে কিভাবে সনদ ইস্যু হলো তা আমি জানিনা , এর সবকিছুই গোলাম মোস্তফা স্যার জানে।

গত ১৩ এপ্রিল ২০২২ তারিখে বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর একেএম সেলিম চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রে গোপালগঞ্জ জেলা রোভার লিডার ও সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক গোলাম মোস্তাফার বিরুদ্ধে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেন।ওই নোটিশে তাকে আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানের জন্য বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এই প্রশিক্ষণে যে সকল শিক্ষক অংশগ্রহন করেছেন সকল প্রশিক্ষনার্থী একটি করে দল পরিচালনা করতে পারবেন। এছাড়া আগামী ২০ এপ্রিলের কাউন্সিলে তারা ভোট প্রদান করতে পারবেন।

ওই কাউন্সিলে গোলাম মোস্তফা সাধারণ সম্পাদক পদে লাড়াই করবেন বলে জানাযায়। গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে এরআগেও প্রশিক্ষকরা তাদের সাথে অসধাচরন, সনদ প্রদানে চাপ সৃষ্টি, হুমকি, অশালীন ও শিষ্ঠাচার বর্হিভূত আচরনের জন্য একধিকবার রোভার অঞ্চলে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিষয়টি সামনে এসছে। আমি যাতে সম্পাদক নির্বাচিত না হতে পারি তার জন্য প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। ৫ দিন যাবত প্রশিক্ষণ হলো তখন কেউ প্রশ্ন করেনি, এখন কেন এই প্রশ্ন উঠছে ? যারা প্রশিক্ষন নিয়েছে তারাই সনদ পেয়েছে। এখন আমার বিরুদ্ধে শুধু শুধু দোষারোপ করছে।

(টিকেবি/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৪ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test