E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

সাভারে পিটিয়ে রিকশা চালকের পা ভেঙে দিলেন পুলিশ সদস্য

২০২৪ মে ১৭ ১৭:২৭:২৩
সাভারে পিটিয়ে রিকশা চালকের পা ভেঙে দিলেন পুলিশ সদস্য

তপু ঘোষাল, সাভার : ঢাকা জেলার সাভারে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রিকশাচালকের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় একটি আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে রিকশাচালকরা।

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গেন্ডা এলাকায় মো. ফজলু নামের ওই রিকশাচালককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে সাভার সুপার ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।

এদিকে খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাভার থানা রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করে রিকশাচালকরা।

আহত রিকশাচালক মো. ফজলু দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর থানার বনসাপুর এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। প্রায় ২২ বছর ধরে তিনি সাভারে থাকছেন।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হলেন -ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের র‌্যাকারচালক মো. সোহেল রানা। শুক্রবার র‌্যাকারচালক সোহেল ও মোস্তফা সাভারে দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলেন।

ভুক্তভোগী রিকশা চালক ফজলু বলেন, আমি অটোরিকশা চালাই। আজ আমি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেন দিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় পাকিজার সামনে থেকে মোটরসাইকেলযোগে র‌্যাকারচালক সোহেলসহ দুইজন ধাওয়া করেন। গেন্ডা বাস স্ট্যান্ডের কাছে গেলে আমাকে ধরে ফেলে তারা। আমাকে রিকশা থামাতে বললে সাইড করে থামাতে চাই। পরে তিনি একটি লোহার রড দিয়ে প্রথমে বাম পায়ে আঘাত করেন। আমি হাত দিয়ে প্রতিহত করতে চাইলে তিনি ডান পায়ে সেই লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেন। এরপর আমি রাস্তায় পড়ে যাই, আর উঠে দাঁড়াতে পারি নাই। পেটানো দেখে স্থানীয়রা এসে ওই পুলিশকে ঘিরে ধরে। তখন তিনি সবার উদ্দেশ্য বলেন, আমি ভুল করেছি, এখন রিকশাচালককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করতে দেন। পরে স্থানীয়রা চলে যায়। কিন্তু আমাকে অপর একটি রিকশায় তুলে দিয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে তিনি চলে যান। থানা রোডের সাভার প্রেসক্লাবের সামনে ঘটনা শুনে অন্যান্য রিকশাচালকরা বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। আমার কথা হলো আমার রিকশা নিয়ে যাবে, কিন্তু আমার পা ভেঙে দিল কেন?

বিক্ষোভ থেকে রুবেল নামের এক রিকশা চালক বলেন, ভুক্তভোগী ফজলুকে নিয়ে সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সময় র‌্যাকারচালকদের সঙ্গে থাকা অটোরিকশা আটক করা দুই দালাল আবারও গতিরোধ করেন। পরে অন্যান্য রিকশাচালকরা বিষয়টি জানতে পেরে প্রেসক্লাবের সামনে থানারোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

তিনি আরও বলেন, ফজলুকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে কিন্তু ফেরত দেওয়া হয়েছে। পরে তাকে সুপার ক্লিনিকে পাঠানো হয়। আমরা লোকাল রাস্তায় রিকশা চালাই। আমরা গরিব মানুষ, ফজলুর ওপর বর্বরতা দেখে বিচারের দাবিতে সড়কে দাঁড়িয়েছি। র‌্যাকারের এই সোহেল ১ সপ্তাহ যেতে না যেতেই রিকশা ধরে দুই হাজার করে টাকা নেয়।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত সোহেল রানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে র‌্যাকার চালক মোস্তফা বলেন, আমি ওই রিকশা চালককে মারিনি। তবে আমি আজ র‌্যাকারের দায়িত্বে রয়েছি। আমার নাম তো মোস্তফা, আহতের কাছে জানতে চাইলেই বলবে কে পা ভেঙে দিয়েছে। আমি তো ওর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আমি ডিউটিতে এসেই দেখি এসব ঘটনা। সোহেল ডিউটিতে এবং ঘটনাস্থলে ছিলেন। আমি বলেছি আগে চিকিৎসা করো পরে যা হওয়ার হবে। একথা বলে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।

এ ব্যপারে জানতে ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন হোসেন শহীদ চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান।

(টিজি/এসপি/মে ১৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০১ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test