'শেখ হাসিনা ভারতের সক্রিয় মদদপুষ্ট হয়ে জাতির সাথে বেঈমানি করেছেন'

রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে এক জনসভা নেতারা বলেছেন, 'শেখ হাসিনা ভারতের মদদপুষ্ট হয়ে জাতির সাথে বেঈমানি করেছেন'।

বুধবার বিকেলে ফরিদপুর শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে ‌ ফরিদপুর জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি ‌মৌলানা আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‌দলটির জেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল নাসির এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির প্রধান উপদেষ্টা শায়খুল হাদিস আল্লামা হেলাল উদ্দিন, উপদেষ্টা শায়খুল হাদিস আল্লামা আবুল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ‌জালাল উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমিন, যুগ্ম মহাসচিব ‌মুফতি শরাফত হুসাইন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ‌মাওলানা এনামুল হক মুসা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হোসেন জালালী কেন্দ্রীয় সহ-বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ফরিদপুর জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি সুবাহান মাহমুদ, সহ-সভাপতি মুফতি মাহমুদ হাসান ফায়েক, সহ-সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান মোল্লা প্রমুখ। এছাড়া সমাবেশে সংগঠনটির ফরিদপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

এসময় বক্তব্যে বক্তারা বিগত দিনের আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন,গত ১৬ বছর ওলামা মাশায়েখের ওপর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে গুম,খুন, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল বন্দি করেছিলেন তা ভুলে যাবার মত নয়।

তারা বলেন, ৯৬ % মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ যে দেশের ইসলামের পতাকা চিরতরে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা এখনো বিভিন্ন পায়তারা করছেন।

গত ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্ষমতা এদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করে বাংলাদেশ থেকে হাসিনাকে বিতাড়িত করা হয়েছে।

বক্তারা সনাতন ধর্মের ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে‌ অবিলম্বে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে, ইসকনের কর্মকাণ্ড ‌বন্ধ করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট দাবি জানান। বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামের একজন আইনজীবীকে যেভাবে তারা হত্যা করেছে তা খুবই দুঃখজনক এবং উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা একটি শান্তি প্রিয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সম্প্রীতি বজায় থাকবে। আমরা যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে আমাদের কর্মকাণ্ড আগামী দিন অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আমরাই একটি শান্তিপ্রিয় ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গড়তে পারবো।

বক্তারা আক্ষেপ করে বলেন, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার পঞ্চপল্লীর মুসলমান হত্যার সুষ্ঠু বিচার এখনো হয়নি। আমাদের এই দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর কাউকে হত্যা করে আমরা শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই না। বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে ৫ই মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অনুষ্ঠানে যেভাবে গুলি করে আমাদের সাধারণ জনগণের উপর ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছিল সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আজকে দেশ থেকে পালিয়েছে। যদি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার পঞ্চপল্লীর মুসলিম পরিকল্পিত হত্যার বিচার হতো তাহলে গতকালকে চট্টগ্রামের যে আইনজীবীকে হত্যা করেছে তার পুনরাবৃত্তি ঘটতো না। বিগত ১৫ বছরে ভারতের সাহায্য নিয়ে শেখ হাসিনা যেভাবে নির্বাচন চেয়েছে ক্ষমতা টিকে থাকার জন্য তাই করেছে। বক্তারা শেখ হাসিনার সাথে প্রতিবেশি দেশ ভারতের সম্পর্কের সমালোচনা করে বলেন, 'ভারতের সক্রিয় মদদপুষ্ট শেখ হাসিনা জাতির সাথে বেইমানি করেছেন'।

তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট হতে ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনা শুধুই প্রতিশোধের রাজনীতি করেছেন। ফরিদপুরের বিভিন্ন থানা ও আশেপাশের জেলা থেকে খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে উপস্থিত ছিলেন।

(আরআর/এএস/নভেম্বর ২৮, ২০২৪)