E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

কালকিনিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ৩

২০২৪ ডিসেম্বর ২৭ ১৫:০৫:২৮
কালকিনিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ৩

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভাদুরী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে ইউপি সদস্য বাবা ও তার ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরো ১০ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোরে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মোতায়েন আছে।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের সাথে একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্তার শিকদারের আধিপত্ত¡্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকটি হত্যাকান্ড ও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনার মামলায় দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিলেন ইউপি সদস্য আক্তার শিকদারসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোরে আক্তার শিকদারের বসতঘরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ও তার ছেলে মারুফ শিকদার এই খবর শুনে লোকজন নিয়ে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোরে এলাকায় আসেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্তারের উপর হামলা চালায়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।

সংঘর্ষের সময় কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভাদুর এলাকার মতিন শিকদারের ছেলে ইউপি সদস্য আতাউর রহমান আক্তার শিকদার (৪৮) ও তার ছেলে মারুফ শিকদারকে (২০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়াও নিহত ইউপি সদস্যের কর্মী পার্শবতী এলাকা খুনেরচরের রশিদ চৌকিদারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম চৌকিদার (৩৫) নামের আরেকজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা নেয়ার পথে মারা যান। এছাড়াও এই ঘটনায় আরো ১০ জন আহত হন। আহত জব্বার ও জুয়েলসহ অন্যরা কালকিনির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। বাকী আহতদের নাম জানা যায়নি।
নিহত আক্তার শিকদার কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের তিনবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও বাশগাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কর্মী ছিলেন।

এদিকে ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি থাকায় অতিরিক্ত সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন আছে। তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

নিহত ইউপি সদস্য আক্তার শিকদারের বাবা মতিন শিকদার বলেন, আমার ছেলে ও নাতীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন চেয়ারম্যান সুমন ও তার লোকজন। এই ঘটনায় আমাদের আরো এক কর্মী মারা গেছেন। এর বিচার চাই। সুমন ও তার লোকজনের কঠিন বিচার চাই। আমার ছেলে ও নাতিকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যার বিচার চাই।

কালকিনির বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, আমি ঢাকায় আছি। শুনেছি এলাকার অন্যদুটি পক্ষ এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমিও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই।

কালকিনি থানার এস.আই সুশিল বলেন, ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ও তার ছেলে মারুফ নিহত হয়েছেন। এছাড়াও ঢাকা নেয়ার পথে আরো একজন মারা গেছেন বলে জেনেছি।

কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকায় বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড মনে হচ্ছে। পুলিশের একাধিক টিম অপরাধীদের ধরতে কাজ করছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই ঘটনায় এখনো কাউকেই আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে, ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু আলামত পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে, নাম সংগ্রহ করছে একাধিক টিম। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

(এএসএ/এএস/ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test