মা-বাবার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন ড. আনিসুর রহমান
সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : কাউরাট দাখিল মাদ্রাসা মাঠে সকাল ১১ টায় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে ড. আনিসুর রহমানের। জানাযায় অংশ মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেন্দুয়া উপজেলা সর্বত্র মাইকে প্রচার দিয়ে দাওয়াত দেওয়া হয়। জানাযা শেষে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী কাউরাট গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সাইডুলী নদীর তীরে ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন স্থানে মা-বাবার কবরের পাশেই বুধবার দুপুরে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বর্নাঢ্য জীবনের অধিকারী ড. আনিসুর রহমান। তিনি গত ৫ জানুয়ারী রোববার দুপুরে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি........রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি তিন কন্যা রেখে গেছেন।
ড. আনিসুর রহমানের আপন চাচাতো ভাই কাউরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: মোজ্জাম্মেল হক মন্টু জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় ড. আনিসুর রহমানের মরদেহ ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়। এরপর সেগুন বাগিছা জামে মসজিদে নামাজের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার সকাল ১১ টায় কেন্দুয়া উপজেলার কাউরাট দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে নামাযের জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। সর্বস্তরের মানুষ এই জানাযায় অংশ নেবেন।
ড. আনিসুর রহমান তথকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী হাফিজুর রহমানের ছেলে। তিনি ১৯৩৩ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। তার মা আনোয়ারা বেগম। ১৯৪৯ সনে সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল ঢাকা থেকে এস.এস.সি, ১৯৫১ সনে ঢাকা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাস করেন। ১৯৫৫ সনে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে বি.এ অর্নাস সম্পন্ন করেন। ১৯৫৬ সনে অর্থনীতি এম.এ প্রথম বিভাগে প্রথম ও ১৯৬২ সনে অর্থনীতিতে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৫৯ সন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রভাষক এবং ১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ সন পর্যন্ত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের রীডার হিসাবে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সন থেকে ১৯৭৫ সন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৫ সন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৪ সনে প্রথম ডিরেক্টর ইনস্টটিউট অব সোসালসায়েন্স এবং প্রফেসর ইস্ট এন্ড ওয়েস্ট সেন্টার হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
এর আগে তিনি ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনে মন্ত্রীর পদমর্যাদা এক বছর দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মকেক্ষ তার পছন্দ না হওয়ায় তিনি সেই পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগেরে প্রফেসর পদে ফিরে যান। ড. আনিসুর রহমান ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সুইজারল্যান্ড জেনেভাতে আন্তজার্তিক শ্রম সংস্থায় সিনিয়র রিচার্স অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সনে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বোর্ড অব ডিরেক্টর রিচার্স ইনসিয়ে ভিভস বাংলাদেশ, রবীন্দ্র সংগীত ছায়ানট সংগীত বিদ্যালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
ড. আনিসুর রহমান খুব সাদাসিধে জীবন যাপন করেছেন। ক্ষমতা ও অর্থের লোভ তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। ব্যক্তিগত জীবনে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের থেকে একটু আলাদা। কোন এক সময় অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে আন্তজার্তিক পর্যায়ে উন্নীত হলেও সহজ সরল আড়ম্বরহীন ব্যবহার ও চালচলনে কোন রকম তারতম্য বা পরিবর্তন কেউ দেখেননি। তিনি ছোট বেলা থেকেই কিছুটা আপন ভোলা মানুষ ছিলেন। মানবিক মানুষ হিসেবে স্কুল জীবনে নিজের টিপিনের খাবার অন্যদের খাইয়েছেন। মানুষের অর্থনীতির মুক্তির লক্ষ্যে দেশের এক প্রাপ্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছোটে বেড়িয়েছেন তিনি। অনেক গরীব অথছ মেধাবী শিক্ষার্ত্রীর লেখাপড়ার খরচ মিঠিয়েছেন ব্যক্তিগত অর্থে। অসংক্ষ সেমিনার সেম্পুজিয়ামে অংশ গ্রহণ করেছেন তিনি। অর্থনীতির উপর লিখেছেন অনেক বই।
এক দিনের এক ঘটনায় জানা যায়, আমিরিকায় ড. আনিসুর রহমানের সম্মানআর্থে কিছু দেশি বিদেশী অতিথির জন্য সান্ধ্য ভোজের আয়োজন করা হয়। তিনি সেখানে উপস্থিত হন ঠিকই, কিন্তু তার গলায় ট্রাই না থাকায় উপস্থিত সকলে প্রধান অতিথির সম্মান রক্ষায় তাদের ট্রাই খুলে রেখে দেন। কয়েক বছর আগেও ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থনীতি সুসাইটি তাঁর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য স্বর্ণপদক দিয়ে সম্মানিত করার সিন্ধান্ত নিলে সে সিন্ধান্ত তিনি বাতিল করে বলেন, আমার এসবের কোন প্রয়োজন নেই।
প্রকাশিত বই সমূহ: ড. আনিসুর রহমানের লেখা বইসমূহের মধ্যে রয়েছে উন্নয়ন জিজ্ঞাসা, অপহৃত বাংলাদেশ, পিপলস সেলফ ডেভেলমেন্ট, অসীমের স্পন্দন- রবীন্দ্র সংগীত বোধ ও সাধনা, যে আগুন জ্বলে ছিল- মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ, সঙ্গস অব টেগোর, ফিলসফি, সিলেক্টেড ট্রানশ্লেশনস, পেইন্টিংস, পার্টিসিপেশন অব দি রুরাল পুয়োর ইন ডেভেলপমেন্ট, মাই স্টোরি অব ১৯৭১, একুশে ও স্বাধীনতা: বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং সমাজবাস্তবতা, পথে যা পেয়েছি-১, পথে যা পেয়েছি-২, দ্য লস্ট মোমেন্ট: ড্রিমস উইথ অ্যা নেশন বর্ন থ্রু ফায়ার ইত্যাদি।
(এসবি/এসপি/জানুয়ারি ০৭, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- চিকিৎসাসেবা নিয়ে ক্ষুব্ধ সোহেল রানা
- ‘নতুন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক বন্দোবস্ত প্রয়োজন’
- দিনাজপুরে সামরিক শাসক রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করে
- ‘প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু না হওয়ায় রাজনৈতিক অজুহাত’
- আইকনিক মসজিদ নির্মাণে ২৪৪ কোটি টাকা দেবে সৌদি সরকার
- সাবেক এমপি মোজাফফর ও দুই ছেলেসহ ৯ নেতার নামে মামলা
- কাপ্তাইয়ে বিজিবির অভিযানে ২৮ লাখ টাকা মূল্যের অবৈধ ভারতীয় সিগারেট জব্দ
- 'ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড' পাচ্ছেন নারী দলের অধিনায়ক আফঈদা
- জুলাইয়ের ২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯৩ কোটি ডলার
- আটকে গেল জুলাই শহীদদের আবাসন প্রকল্প
- সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি স্থগিত
- বৃত্তির দাবিতে কেন্দুয়ায় কিন্ডার গার্টেন শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন বিক্ষোভ
- ‘পুরনো আইনে বাংলাদেশকে পরিচালিত হতে দেব না’
- জামালপুরে ৪ হাজার ইয়াবা উদ্ধার, ৩ কারবারি গ্রেফতার
- একনেকে ১২ প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় ৮ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা
- কলা গাছের ভেলায় ভেসে এলো ভারতীয় শিশুর লাশ
- সুবর্ণচরে ঘর নির্মাণে হামলা ভাঙচুরের অভিযোগ
- বরিশালে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত
- শাটডাউনের মাঝেই স্মারকলিপি প্রদান
- ২৯ বছর ধরে বেতন নিচ্ছেন ওলামা লীগ নেতা
- বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করলো মাদকাসক্ত ছেলে
- টি-স্টলে পাঠাগার
- সান্তাহারে ট্রেনে কাটা পড়ে নেভি ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু
- ফরিদপুরে পূজা উদযাপন ফ্রন্টের কমিটি গঠন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা
- ঠাকুরগাঁওয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে চাষাবাদ, ব্যবস্থা নিতে বললেন ডিসি
- বসন্ত এলে
- নার্সেস এসোসিয়েশন সিওমেক’র নির্বাচন সম্পন্ন
- অনন্ত প্রেম
- শীত পড়েছে গ্রামে
- চুয়াডাঙ্গায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর
- কমলনগরে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আটক
- বেলকুচিতে জনমত জরিপে এগিয়ে বদিউজ্জামানের মোটরসাইকেল
- শীত আসতেই মুখ-হাত-পায়ে চামড়া উঠছে, কী করবেন?
- হিমেল হাওয়ায় কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ
- ‘কোন মানুষ অর্থের কাছে চিকিৎসায় হেরে যাবে না, সবাই বাঁচবে’
- ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি
- 'ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড' পাচ্ছেন নারী দলের অধিনায়ক আফঈদা
- পারিবো না
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর
- মা
- প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা
- প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
- ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মৃত দুই কৃষক পরিবারকে তারেক রহমানের মানবিক সহায়তা প্রদান
- সাবেক এমপি মোজাফফর ও দুই ছেলেসহ ৯ নেতার নামে মামলা
- সবজির দাম কমেছে, সরবরাহ বাড়লেও ইলিশের বাজার চড়া