E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সাতক্ষীরার আনোয়ার হোসেনকে প্রথম ভাষা সৈনিকের স্বীকৃতির দাবি

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯ ১৭:৪৬:৫৪
সাতক্ষীরার আনোয়ার হোসেনকে প্রথম ভাষা সৈনিকের স্বীকৃতির দাবি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ভাষা আন্দোলনে দেশের প্রথম ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেনকে শহিদের স্বীকৃতি ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বাজারের আনোয়ার হোসেন স্মৃতিস্তম্ভ সংলগ্ন এলাকায় মানববন্ধন আয়োজন করে আনোয়ার হোসেন স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি।

আশাশুনি প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক এসকে হাসানের সভাপতিত্বে ও বুধহাটা আঞ্চলিক প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান ইকবাল মামুনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জী, ডিবিসি চ্যানেলের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এম বেলাল হোসাইন, স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সদস্য মাহমুদ হাসান, উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জজ কোর্টের এপিপি এড. শহিদুল ইসলাম, জামায়াত নেতা মাওলানা মোশাররফ হোসেন, আশাশুনি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জিএম মুজিবুর রহমান, বিএনপি নেতা কবির আহমেদ ঢালী, বিএনপি নেতা রফিকুজ্জামান বকুল প্রমূখ।

দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জী বলেন, শহিদ ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ১৯৩০সালে নানার বাড়ি বুধহাটা গ্রামে আনোয়ার হোসেন জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল কনুই গাজী ও মায়ের নাম পরীজান বিবি। তিন ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ছিল সবার বড়। মেধাবী আনোয়ার হোসেন বাড়ি সংলগ্ন বুধহাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। এরপর বুধহাটা বি. বি. এম কলেজিয়েট বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার একপর্যায়ে তিনি খুলনা জেলা স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৪৬ সালে এসএসসি পাস করেন। পরে খুলনার বিএল কলেজে পড়াশুনাকালীন ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন। তরুণ আনোয়ার হোসেন ভাষা আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ খুলনার তৎকালিন গান্ধী পার্কে (বর্তমানে হাদিস পার্ক) ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ইস্তেহার পাঠ করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েকদিন পর তিনি মুক্তি পান।

পরে ভাষা আন্দোলনের মিছিল থেকে ১৯৪৯ সালে পুলিশ তাকে আবারও গ্রেপ্তার করে প্রথমে তাকে কোতয়ালী থানায় রাখা হয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী কারাগারে। সেখানে পাকিস্তান সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন তিনি। একপর্যায়ে ১৯৫০ সালে ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলে খাপড়া ওয়ার্ডে গুলি চালানো হয়। তাতে সাতজন কারাবন্দি নিহত হন। তার মধ্যে ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন ছিলেন অন্যতম। তাই আমরা বিশ্বাস করি মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলনে ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেন দেশের প্রথম শহীদ। অথচ রাষ্ট্রীয়ভাবে তার কোন স্বীকৃতি নেই। তাই আমাদের দাবি শহীদ আনোয়ার হোসেনকে দেশের প্রথম ভাষা সৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হোক।

এছাড়া আশাশুনি সরকারি কলেজের নাম ‘শহীদ ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেনের নামে নামকরণ, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তার স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করাও সরকারিভাবে ট্রাস্ট গঠন করার দাবী জানানো হয়।
মানববন্ধন শেষে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায়ের মাধ্যমে মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩১ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test