E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

পরানগঞ্জ ভূমি অফিসের নায়েব হুমায়ুন কবিরের ঘুষ কেলেঙ্কারি ফাঁস

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৪ ১৮:২৯:১০
পরানগঞ্জ ভূমি অফিসের নায়েব হুমায়ুন কবিরের ঘুষ কেলেঙ্কারি ফাঁস

 

নীহার রঞ্জন কুন্ডু, ময়মনসিংহ : সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ ও হস্তান্তরের অধিকার থাকলেও ভূমি সেবায় প্রতি ধাপেই অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন পরানগঞ্জ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। ভূমি সংক্রান্ত সেবা কার্যক্রমে ঘুষ লেনদেন, উপ-সহকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে যোগসাজশে সম্পত্তি আত্মসাৎ, রাজনৈতিক প্রভাব, ভোগদখলসহ এ খাতে চলছে লাগামহীন দুর্নীতিতে সরাসরি জড়িত নায়েব হুমায়ুন কবির লিটন।

গত ১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে আঃ কাদির নামে ভূমি উন্নয়ন কর পরিষদের জন্য অনলাইনে আবেদন করেন, কিন্তু অনুমোদন এর জন্য সদর উপজেলা পরানগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) হুমায়ুন কবির লিটন ৫ হাজার টাকা দাবি করে, পরবর্তীতে টাকা না দিলে আবেদনকৃত খাজনার নিবন্ধন বাতিল করে। পরে আবার ৮ জানুয়ারিতে নতুন করে খাজনার আবেদন করি কিন্তু তার চাহিদা অনুযায়ী ৫ হাজার টাকা না দেওয়ায় আবার বাতিল করেন আবেদন। পরবর্তীতে এসিল্যান্ডকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেছেন আপনি আবার আবেদন করেন আমি বলে দিচ্ছি তার পর (১৭ ফেব্রুয়ারিতে) অনুমোদন পান তিনি।

ভুক্তভোগী-২ হেলাল উদ্দিন এর নামজারি করার জন্যে অনলাইনে আবেদন করেন তিনি, আবেদন হওয়ার পর এসিল্যান্ডের আইডি থেকে নায়েব এর আইডিতে আসে যাহার আবেদন নং ৪১৬৮২২৯ পরে নায়েব কে সমস্ত দলিল বিআরএস দেওয়া হয়, সব কাগজ পত্র ঠিক আছে বলে, প্রস্তাব গৃহীত করার জন্যে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, পরে টাকা না দিলে উক্ত নামজারী আবেদনটি বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে নতুন করে আবার আবেদন করে ওই নামজারির জন্য নায়েবকে হাতে পায়ে ধরে পরবর্তীতে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার পর ৪১৭৯৩১৪ নং নামজারিটির প্রস্তাব গৃহীত করেন তিনি।

ভুক্তভোগী-৩ পরানগঞ্জ ইউনিয়ন বাঘাডোবা গ্রামের মো: আব্দুল হক তার নামজারির জন্য নায়েব হুমায়ুন কবির ৮ হাজার টাকা নেন তিনি। ভুক্তভোগী-৪ মাজেদা খাতুন এর নামজারির জন্য ৬ হাজার টাকা নেন তিনি। ভুক্তভোগী-৫ জরিনা হ্যারিস এর নামজারিতে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন নায়েব পরে টাকা না দিলে নামজারিটি বাতিল করেদেন যাহার আবেদন নং ৪১২৯৬৬০৮। ভুক্তভোগী-৬ হিরণপলাশিয়া গ্রামের প্রবাসী এক রেমিট্যান্স যুদ্ধা মোঃ মোক্তার হোসেন এর নামজারিতে ১২ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন তিনি। ভূমি সেবার প্রতিটি পর্যায়ে সেবাগ্রহীতাদের অনিয়ম দুর্নীতির সম্মুখীন হতে হয় এবং অধিক পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। এমন কোনো সেবা পাওয়া যাবে না যেখানে সেবাগ্রহীতারা অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হন না।

ভূমি খাতে বিরাজমান ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্রের অভিযোগ পাওয়া গেছে নায়েব হুমায়ুন কবির এর বিরুদ্ধে।, ভূমি উন্নয়ন কর দেখানো ও খতিয়ানে ভুল তথ্য লেখার ভয় দেখিয়ে ভূমি মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া, ঘুষের বিনিময়ে খাসজমি, অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত ও কোর্ট অব ওয়ার্ডসের সম্পত্তি দখলকারী ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালীদের নামে রেকর্ড প্রস্তুত, তহশিল অফিসে ঘুষের বিনিময়ে নামজারির প্যাকেজ নির্ধারণ, ভূমি অফিসের কর্মকর্তার যোগসাজশে অবৈধ দখলকৃত খাসজমি, ক্ষমতাবান ও রাজনৈতিকভাবে নায়েব হুমায়ুন কবিরের প্রভাব ও স্বজনপ্রীতিসহ নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ভূমি সেবা ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘুষের পরিমাণ উল্লেখ করে জমির নামজারির ক্ষেত্রে ৩ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা, খতিয়ানের কপি উত্তোলনে ২শ’ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম এর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা। এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া পর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক ময়মনসিংহ।

(এনআরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test