E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

 অর্থ ফেরত সহ বিচারের দাবি

মানব পাচারকারী সম্রাটের খপ্পরে নিঃস্ব ৪ পরিবার

২০২৫ এপ্রিল ০৯ ১৭:৫৮:২৫
মানব পাচারকারী সম্রাটের খপ্পরে নিঃস্ব ৪ পরিবার

বিপুল কুমার দাস, রাজৈর : মাদারীপুরের সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নর কপালীকান্দী গ্রামের মানব পাচারকারীর সম্রাট আলমগীর খাঁ এর খপ্পরে পড়ে শিবচর উপজেলার দক্ষিণ বহেরা তলা ইউনিয়নের লপ্ত সরকারের চর গ্রামের মেহেদী হাসান (১৯), একই উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের, জাহিদ মোল্লা (২৪), একই উপজেলার নির্বাহী ইউনিয়নের দক্ষিণ চর কামাল কান্দি গ্রামের আবু আবুু নাঈমা ও একই উপজেলার দক্ষিণ বহেরা তলা ইউনিয়নের লপ্ত সরকারের চর গ্রামের জুয়েল মুন্সী (৩০) নামক যুবকদের ইতালি পাঠানোর কথা বলে উক্ত ৪ যুবকের অভিভাবকদের নিকট থেকে লোক প্রতি ১৭ লক্ষ টাকা করে মোট ৬৮ লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু ইতালি পাঠানোর কথা বলে গত ৭ মাস আগে দুবাই পাঠায়, ওখানে ১৫ দিন রাখার  রাখার পর লিবিয়া পাঠায় এবং ওখানে নিয়ে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেয়। 

ওই মাফিয়া চক্র জন প্রতি ২৪ লক্ষ টাকা মোট ৯৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। উল্লেখিত টাকা যত ক্ষণ পর্যন্ত না দেয়া হয় ততক্ষণ পর্যন্ত অমানসিক শারীরিক নির্যাতন করে এবং তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়, মাফিয়া চক্র সেটা নির্যাতিতদের অভিভাবকদের ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখায়। উক্ত ভিডিও কল দেখার পর ভয়ে উল্লেখিত ৪ ভুক্তভোগীর অভিভাবকগণ বাড়ি ঘর, জায়গা জমি বিক্রি করে ৯৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ভূক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনে। বর্তমানে উল্লেখিত ৪ ভূক্তভোগীর পরিবার নিঃস্ব এবং কঠিন মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভূক্তভোগীদের অভিভাবকগণ তাদের দেয়া সম্পূর্ণ টাকা ফেরত সহ মানব পাচারকারী চক্রের সম্রাট আলমগীর খাঁ কে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচারের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে উক্ত ৪ ভুক্তভোগী পরিবারের অভিভাবক, ছালাম মুন্সী, গফ্ফার মোল্লা, ইলিয়াস খান, লাল মিয়া মুন্সী সাংবাদিকদের জানান, আমাদের ছেলেদের ইতালি পাঠানোর জন্য, মানব পাচারকারী চক্রের সম্রাট আলমগীর খাঁকে জন প্রতি প্রথম বার ১৭লক্ষ টাকা দ্বিতীয় বার ২৪ লক্ষ টাকা মোট ৪১ লক্ষ টাকা হাতে ও ব্যাংকর মাধ্যমে দেয়া হয়। এভাবে ৪ ভূক্তভোগী পরিবারের অভিভাবকদের নিকট থেকে সর্বোমোট ১ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা মানব পাচারকারী চক্রের সম্রাট আলমগীর খাঁ কে দেয়া হয়। আমরা ভয়ে, আমাদের ছেলেদের জীবিত উদ্ধার এর জন্য, আমাদের জায়গাজমি সহায় সম্বল সব বিক্রি করে উল্লেখিত টাকা দিতে গিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। আমাদের দেওয়া উল্লেখিত টাকা ফেরত চাই ও মানব পাচারকারী চক্রের সম্রাট আলমগীর খাঁ কে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি ও বিচার চাই। এব্যাপারে শিবচর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধে ও দমন আইনে মামলা হয়।

এ ব্যাপারে ফারুক মুন্সী জানান, ইতালি পাঠানোর ব্যাপারে মানব পাচারকারী চক্রের সম্রাট আলমগীর খাঁ, কে উল্লেখিত ৪ পরিবারের অভিভাবকগণ ১ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা দেয়, সে সময় স্বাক্ষী স্বরূপ ছিলাম। আমি ভূক্তভোগীদের দেয়া টাকা ফেরত চাইলে, বহু টাল বাহানা করে এবং টাকা ফেরত না দেয়ার পাঁয়তারা চালায়।

স্বাক্ষী ফারুক মুন্সী আরো জানান, মানব পাচারকারীর সম্রাট আলমগীর খাঁ কে আইনের আওতায় এনে টাকা ফেরত আনার ব্যবস্থা সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।

এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার ব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নর কপালীকান্দী মানব পাচারকারীর সম্রাট আলমগীর খাঁর বাড়িতে যাওয়া হয় এবং কাউকে পাওয়া যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আলমগীর খাঁর ছোট ভাই জাহাঙ্গীর এর স্ত্রী তারা বেগম পাওয়া যায় এবং এর কাছে এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য জিজ্ঞাসা বাদ করলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না।

আর এদিকে শিবচর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রেজাউল করিম এর কাছে উক্ত ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া তিনি জানান, এ ব্যাপারে শিবচর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধে ও দমন আইনে মামলা হয়েছে। আমরা আসামি দের গ্রেফতার করে আইন- আনুগ ব্যবস্থা নেওয়ার তৎপর রয়েছি।

(বিডি/এসপি/এপ্রিল ০৯, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test