E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ফরিদপুরে টেন্ডারের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি-জামায়তের দফায় দফায় সংঘর্ষ

২০২৫ এপ্রিল ১৮ ১৭:২৬:২৯
ফরিদপুরে টেন্ডারের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি-জামায়তের দফায় দফায় সংঘর্ষ

রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় একটি বালুমহল ইজারার দরপত্র বাণিজ্যের (নিকো) টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ছাত্রদলনেতাসহ গুরুতর আহত দু'জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন-বোয়ালমারী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রবিন মোল্যা (৩২) ও মা ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী ও সাবেক উপজেলা ছাত্রদল নেতা রিয়াজ মৃধা (৪৭)। তারা বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ।

আজ শুক্রবার দুপুরে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান।

এর আগে গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাত সোয়া ১০টার দিকে দরপত্রের নিকোর টাকা ভাগ করতে গিয়ে বনিবনা না হওয়া বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের মধ্যে একাধিক দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি সোঠা ব্যবহৃত হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এছাড়া, ঘটনাটির কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

জানা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় ১৪৩২ সালের ১ বছরের জন্য ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার অন্তর্গত ঘোষপুর ইউনিয়নের মধুমতি নদীর লঙ্কারচর বালুমহল ইজারার দরপত্র আহ্বান করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।

এ ইজারায় ১৫টি দরপত্র বিক্রয় হলেও দরপত্রদাতাদের মাঝে সমঝোতার ভিত্তিতে গোপন নিলাম ডাকের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হয়। যাতে আধিপত্য বিস্তার ও পরস্পরের সাথে মৌখিক সমঝোতা চুক্তি করেন বিএনপি-জামায়াতের সদস্যরা। সমঝোতার ভিত্তিতে দরপত্রদাতাদের মাঝে টাকা ভাগাভাগির কথা থাকলেও নিকো-বোর্ড দরপত্র দাতা জুয়েল বিশ্বাসকে পাওনা টাকা না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।

এ বিষয়ে গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের সামনে ‘মা ফার্মেসি মার্কেট’ চত্বরে এক শালিস বৈঠক বসে পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন আলম চান, সাবেক পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিরাজ মৃধাসহ স্থানীয়রা। শালিস বৈঠক শুনানির সময় আঁধারকোঠা গ্রামের মঈনুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে জামায়াতে কর্মী জুয়েল বিশ্বাসের কোমরে থাকা একটি দেশীয় অস্ত্র দেখে ফেলে সেখানে থাকা লোকজন। এরপর তার সাথে প্রতিপক্ষ গ্রুপের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হওয়ার ঘটনা ঘটলে তিনি ওইখান থেকে বের হয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর জামাত কর্মী জুয়েল দেশীয় অস্ত্রে সুসজ্জিত দলবল নিয়ে ফিরে আসলে উপস্থিত বিএনপি কর্মীদের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে।

এদিকে, ঘটনার পর দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। জামায়াত কর্মী জুয়েল বিশ্বাসের দাবি, তিনি টাকা চাইতে গেলে রাসেল আহমেদ তাকে ফাঁদে ফেলে মারধর করেন। অন্যদিকে রাসেল বলেন, 'জুয়েল আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আসে। পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে আমার ভাইকে আহত করেছে।'

বিএনপি নেতা মিরাজ মৃধাও বলেন, “আমার ফার্মেসিতে আলোচনার ছলে ঢুকে সে অস্ত্র নিয়ে আসে। পরে পালিয়ে গিয়ে দুর্বৃত্তদের নিয়ে এসে হামলা চালায়।”

বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের সংঘর্ষের খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটির তদন্তে কাজ করছে বোয়ালমারী থানা পুলিশ।

(আরআর/এসপি/এপ্রিল ১৮, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test