E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সেতুর অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না কাজ চলছে ঢিমেতালে

২০২৫ মে ০৩ ১৮:৫৫:৫০
সেতুর অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না কাজ চলছে ঢিমেতালে

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : জনগণের দুর্ভোগ কমাতে নদীর উপর নির্মাণ করা হচ্ছে সেতু। তবে সেই সেতুই এখন চলাচলকারীদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্দিষ্ট সময় পার হতে চললেও শেষ হয়নি অর্ধেক কাজও। ফলে দুর্ভোগে পড়ছেন কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ। 

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরতরা বলছেন, ভূমি অধিগ্রহন জটিলতায় সেতু নির্মাণ কাজে ধীরগতি হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, তদারকির অভাব, জবাবদিহিতা না থাকা ও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে ধীরগতিতে সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। ফলে স্থানীয়দের সেতুর অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না, দুর্ভোগ বাড়ছে দিনের পর দিন। এমন দুর্ভোগের দেখা মিলেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপায়।

জানা যায়, দু’পাড়ের মানুষের নির্বঘ্নে চলাচলের স্বার্থে উপজেলার তমালতলা নামক স্থানে কালী নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে একটি সেতু। তবে সেতু নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার কয়েক ইউনিয়নের বাসিন্দারা। সেতুটি দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু দুই বছর শেষ হতে চললেও শেষ হয়নি সেতুটির ৫০ ভাগ কাজ।

জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শৈলকুপা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দুরে তমালতলা নামক স্থানে নির্মিত ১২১ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বাগেরহাট জেলার মেসার্স মোজাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিঃ ২০২৩ সালের ৩১ আগষ্ট কার্যাদেশ পায়। তবে কাজটি শুরু করে যশোরের ঠিকাদার বাবু পাটওয়ারী। চলতি বছরের ২০ জুন কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির দক্ষিণ পাশে যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প হিসেবে লোহার একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম পাশে এবড়োথেবড়ো সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ছোট ছোট যানবাহন। প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে চলাচল হাজারো মানুষের। সেতুটি নির্মাণে ধরিগতি হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছে উপজেলার কাচেরকোল, দিগনগর, সারুটিয়া, ত্রিবেনী, মির্জাপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা। ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারায় মালামাল নিয়ে দূর্ভোগে পড়ছেন কৃষকসহ ব্যবসায়ীরা।

ভ্যান চালক আব্দুল করিম বলেন, ‘মালামাল নিয়ে চলাচল করতে খুবই অসুবিধা হয়। সেতুর কাজ খুব ধীরগতিতে চলছে। কবে শেষ হবে তাও জানি না। সেতু নির্মাণে জোর দিতে কারও কোনো পদক্ষেপও নিতে দেখা যাচ্ছে না।’

ইজিবাইক চালক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘মাঝে মাঝে ইজিবাইক উল্টে যায়। সেতুর কাজ এতটাই ধীরে চলছে দেখে মনে হয় কয়েকবছরেও কাজ শেষ হবে না। কাজের কোন তদারকীও চোখে পড়ে না। ঠিকাদার ইচ্ছামত কাজ কওে যাচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও মুদি দোকানী স্বপন সাহা বলেন, ‘আমাদের জমি ব্রীজ সংলগ্নে রয়েছে। এখনো আমাদের জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। এজন্য আমাদের স্থাপনা সরায়নি। জমি অধিগ্রহনে নানা সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও ঠিকমত তদারকির অভাবে কাজে ধীরগতি রয়েছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ভোগান্তিতে আছে।’

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার রাশেদুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহন জটিলতা থাকায় কাজে কিছুটা ধীরগতি হচ্ছে। এখনো সেতুটির পূর্ব ও পশ্চিম পাশের স্থাপনা সরানো হয়নি। ফলে কাজের গতিতে বেশকিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে।’

জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সেতুটির পূর্ব ও পশ্চিম পাশে জমি অধিগ্রহনের সমস্যা রয়েছে। এখনো আমরা দুই পাশের জমি বুঝে পাইনি। জমি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেছি। আশা করি জমি অধিগ্রহনের সমস্যা কেটে গেলে কাজের গতি ফিরবে। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা কেটে গেলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলেও যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

(এসআই/এসপি/মে ০৩, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test