E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

কুড়িগ্রামে সহকারী ভূমি কর্মকর্তার ঘুষের ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

২০২৫ মে ০৫ ১৭:১৫:২০
কুড়িগ্রামে সহকারী ভূমি কর্মকর্তার ঘুষের ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মন্ডলের ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দুই মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে ভুক্তভোগী ও কর্মকর্তার কথোপকথন এবং ১১ হাজার টাকা গুণে নেয়ার দৃশ্যটি নিয়ে তোলপাড় পুরো জেলা।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়,বন্দবেড় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার পরিষদের একটি বিশ্রাম কক্ষে বিছানার ওপরে বসে সিগারেট খাচ্ছেন। এসময় হাস্যোজ্জল অবস্থায় জনৈক ব্যক্তির নিকট হতে জমির কাগজপত্র দেখেন ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মন্ডল। কথোপকথনের এক পর্যায় তাকে ৫শত টাকার নোট গুণে মোট ১১হাজার টাকা দেন এক ব্যক্তি। এসময় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মন্ডল টাকা গুণে নেয়ার সময তিনি বলেন, বেশি করে দেন। বড় স্যারের কাছে গেছেন যহন। কাল না কলেন ১৫ দিমু। টাকা দেয়া ব্যক্তি বলেন, কো, আপনি শুনতে ভুল করেছেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিও-র সূত্র ধরে বন্দবেড় ইউনিয়নের চর বন্দবেড় গ্রামের আব্দুল্লাহেল কাফী ঘুষের টাকা লেনদেনের ভিডিও-র সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ৩ একর সাড়ে ৪শতক জমির খাজনা দিতে বন্দবেড় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাই। সেখানে ভূমি কর্মকর্তা আমার কাছে সরকারি হিসেব অনুযায়ী ১ লাখ ১২ হাজার টাকা খাজনার হিসাব দেন। এসময় আমি বলি-২০২৪ সাল পর্যন্ত খাজনা দেওয়া আছে। এতো টাকা কীভাবে হয়? পরে ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মন্ডল আমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে এক লাখ টাকায় নিষ্পত্তি করে দিতে চান। পরে দরকষাকষি করে ৭১ হাজার টাকা রফাদফা হয়। গত মাসে আমি তাকে ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। গত সপ্তাহে বাকি ১১ হাজার টাকা তার খাস কামরায় দিয়েছি। এসময় কে বা কারা ভিডিও করেছে আমি জানিনা। তবে ভূমি কর্মকর্তার কাছে যখন খাজনার দাখিলা নেই। সেখানে দেখতে পাই ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মাত্র এক হাজার ৫০৫ টাকা পরিশোধ দেখিয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে তিনি কোথাও অভিযোগ করেননি বলেও নিশ্চিত করেন।

এই বিষয়ে বন্দবেড় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মন্ডল বলেন, আব্দুল্লাহেল কাফীর সাথে আমার নানা-নাতীর সম্পর্ক। প্রয়োজনে অনেক সময় তার সাথে আমার আর্থিক লেনদেনের ব্যাপার হয়ে থাকে। গত সে আমার নিকট হতে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিল। দুই কিস্তিতে ১০ হাজার করে সেই টাকা আমাকে পরিশোধ করেছে। ভিডিওতে টাকা নেবার বিষয়টি তিনি স্বীকার করলেও কি জন্য নিয়েছেন তা মনে নেই বলে জানান। তবে তিনি খাজনার ৭১ হাজার টাকা নেবার কথা অস্বীকার করেন।
এই বিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জল কুমার হালদারকে একাধিবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এই বিষয়ে রৌমারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল দিও বলেন, ভুক্তভোগী আমার কাছে কিংবা ইউএনও’র কাছে কোন অভিযোগ করেনি। তবে ভিডিও-র বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

(পিএস/এসপি/মে ০৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test