E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিহত আ’লীগ ক্যাডারকে যুবদল কর্মী সাজিয়ে মামলা 

২০২৫ মে ০৭ ১৫:১৩:৩৫
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিহত আ’লীগ ক্যাডারকে যুবদল কর্মী সাজিয়ে মামলা 

বিশেষ প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশায় পূর্বশত্রতার জের ধরে সাবেক রেলপথ মন্ত্রীর ছেলের অস্ত্রধারী ক্যাডার রাশিদুল ইসলাম কে (৩৫) পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

গত শনিবার (৩ মে) বেলা ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।এর আগে এদিন সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের নিভা গ্রামে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

এর দুই দিন পর গত রবিবার (৪ মে) রাত ১০ টার পর নিহত রাশিদুল ইসলামের পিতা কিয়ামদ্দিন মণ্ডল বাদী হয়ে পাংশা মডেল থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় পাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আকিদুল বিশ্বাস কে প্রধান আসামী করা হয়।

মামলাটি হওয়ার পর থেকে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।গত বছরের ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগে পর রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলপথ মন্ত্রীর প্রকাশ্যে দেখা যায় নাই।সেই সাথে রেলপথ মন্ত্রীর ছেলে মিতুল হাকিমের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরাও গা-ডাকা দেয়।সম্প্রতি বিএনপির দুই গ্রুপের কোন্দলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এলাকায় আসতে শুরু করে। এমনকি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে বিএনপির নেতাদের সাথে সংযোগ তৈরি করতে থাকে তারা।বিএনপির নেতারাও প্রতিপক্ষ কে ঘায়েল করতে এসকল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কাজে লাগায়।

এমনই ঘটনা ঘটেছে জেলার পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নে।আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির দুই গ্রুপের কোন্দল চরমে পৌঁছেছে।গত শনিবার সকালে দুর্বৃত্তদের হামলায় রাশিদুল ইসলাম নিহত হলো বিএনপির একটি পক্ষ সুযোগ নেয়।যদিও গত ৫ আগষ্টের আগে এই নিহত রাশেদুল ইসলাম কে কখন যুবলীগের অফিসে নেতাদের চেয়ারের পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। আবার কখনো পাংশা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলামের সাথে হাস্যজ্জল ছবিতে দেখা যায়।তবে তার মৃত্যুর পরে পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতৃবৃন্দ তাকে যুবদল কর্মী দাবী করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মামলা বানিজ্য চালাচ্ছে।ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরাই।

এই হত্যা কে কেন্দ্র করে পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফ হাসান সুমনের বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এখানেই শেষ নয় নিহত রাশেদুল ইসলামের বাবাকে নিজেদের পক্ষে নিতে ইউনিয়ন বিএনপির একাংশ প্রতিপক্ষের লোকজন (বিএনপি) কে মামলায় জড়িয়ে দেয়।মামলায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো: রফিকুল ইসলাম, পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ মাসুম বিশ্বাস এর ভাই ইউপি চেয়ারম্যান মো: আকিদুল বিশ্বাসের নাম দেওয়া হয়।শুরু তাই নয় মামলার বাকি আসামীরাও বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।

এ বিষয়ে পাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আকিদুল বিশ্বাস বলেন, এই হত্যার বিষয়ে আমার কিছুই জানা নাই।আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মামলার আসামি করা হয়েছে।পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মুরাদ বিশ্বাস আমাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর জন্য নিহত রাশেদুল ইসলামের বাবাকে দিয়ে আমার নামে মামলা দিয়েছে।আমি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারছি আমার ইউপি সদস্যদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তার এক অনুসারী কে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমি আরও জানতে পারলাম পাট্টা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও রেলপথ মন্ত্রীর অস্ত্রধারী ক্যাডার আব্দুর রব (মুনা) কে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব আমার পায়ের তলা চালাচ্ছে এই মুরাদ বিশ্বাস। মুরাদ বিশ্বাস এই হত্যাকাণ্ড কে পুজি করে আধিপত্য বিস্তার ও মামলা বানিজ্য চালাচ্ছে।

পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মো: মুরাদ বিশ্বাস এর সাথে মুঠোফোনে নিহত রাশেদুল ইসলামের হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাম্ভিকতার সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি নয় জানিয়ে ফোন কেটে দেন।

পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো: চাঁদ আলী খান বলেন,নিহত রাশেদুল ইসলাম যুবদলের কর্মী না।সে মিতুল হাকিমের ক্যাডার।পূর্বশত্রতার জের ধরে মিতুল হাকিমের আর এক ক্যাডার রফিক মন্ডল প্রকাশ্যে হত্যা করেছে। অথচ তার এই হত্যা কে পুজি করে আমাদের দলের কিছু নেতা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে আমাদের দলের লোকজনের নামেই মামলা দেওয়াচ্ছে।

(একে/এএস/মে ০৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test