E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

লংগদু নানিয়ারচর সড়ক নির্মাণে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত

২০২৫ মে ০৯ ০০:৩৫:০৮
লংগদু নানিয়ারচর সড়ক নির্মাণে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি লংগদু-নানিয়ারচর সড়ক নির্মাণে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে এক পর্যালোচনা সভায় সড়কটি নির্মাণে নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানা গেছে।

রাজধানীর আব্দুল গনি রোডে অবস্থিত বিদ্যুৎ ভবনস্থ ডিপিডিসি সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সজল কান্তি বনিক, ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লে. কর্নেল খালেদ, লে. কর্নেল আসিফ এবং রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য মিনহাজ মুরশীদ।

সভা শেষে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য মিনহাজ মুরশীদ জানান, সভাটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। সভায় পর্যালোচনা শেষে রাঙামাটির নানিয়ারচর হয়ে লংগদু-বাঘাইছড়ি উপজেলাকে সংযুক্তকারী সড়কটি নির্মাণের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পাহাড়ি দুর্গম এলাকা বিবেচনায় প্রকল্পটি নির্মাণে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডকে ডিপিপি তৈরির ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ডিপিপি তৈরিতে ৪-৫ মাস সময় লাগতে পারে বলেও জানান তিনি।
মিনহাজ মুরশীদ আরও জানান, ডিপিপি তৈরি হয়ে গেলে সড়কটি নির্মাণে আর কোনো বাধা থাকবে না। তবে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের একটি ছাড়পত্র প্রয়োজন হবে। সেটি পেয়ে গেলে রাঙ্গামাটি জেলা সদরের সাথে লংগদু এবং বাঘাইছড়ি উপজেলাবাসীর সড়ক যোগাযোগ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবেই সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গত, দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে পাহাড়ি জনপদের মানুষ নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানিয়ারচর-লংগদু আঞ্চলিক সড়কের মাত্র ২৪ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ হলেই রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির পাঁচ উপজেলার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। খুলে যাবে সমৃদ্ধির নতুন দুয়ার।

একইভাবে কৃষিপণ্য বিপণন ও পর্যটনে তৈরি হবে গুরুত্বপূর্ণ হাব। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তার পাশাপাশি বছরে বাণিজ্য হবে হাজার কোটি টাকা।

শুধু একটি সড়কই বদলে দিতে পারে পাহাড়ের অর্থনীতি। সড়কটি ঘিরে থমকে আছে পাহাড়ের কয়েক লাখ মানুষের স্বপ্ন আর যোগাযোগ ব্যবস্থার নয়া দিগন্তের হাতছানি।

বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থার কারণে পাহাড়ের সব উপজেলা এখনো জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় আসেনি। এর সঙ্গে গত শতকের ১৯৬০ সালে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ হলে কৃত্রিম হ্রদের কারণে দূরবর্তী বেশ কয়টি উপজেলার মতো নানিয়ারচর, লংগদু ও বাঘাইছড়িও পানিবন্দি হয়ে জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নৌযান একমাত্র ভরসা হওয়ায় উৎপাদিত কৃষিপণ্যের পরিবহন ও বাজারজাত করা যেমন ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে, তেমনি যাতায়াতেও সৃষ্টি হয় নানান ভোগান্তি। তবে ২০২০ সালে নানিয়ারচরের চেঙ্গী নদীতে ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের পর পাহাড়ে সমৃদ্ধির নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়।

এদিকে ৩৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বগাছড়ি-নানিয়ারচর-লংগদু আঞ্চলিক সড়কটির সাড়ে ১৩ কিলোমিটার অংশ আগে থেকেই পাকা ছিল। অবশিষ্ট ২৪ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ হলেই জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে।

এই সড়ক ধরে পাহাড়ি জনপদে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতে খরচ ও সময় সাশ্রয়সহ কৃষি অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে তেমনি মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেকের সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। আর সড়ক যোগাযোগ, পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এমনটাই মনে করছেন পাহাড় বিশ্লেষকরা।

(আরএম/এএস/মে ০৯, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test