E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ৪ জনকে দেয়া হবে পাশাপাশি কবর

২০২৫ মে ০৯ ০০:৫৫:০৬
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ৪ জনকে দেয়া হবে পাশাপাশি কবর

মাদারীপুর প্রতিনিধি : অন্তস্বত্তা স্ত্রীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সিজারিয়ান করাতে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন স্বামী মাওলানা বিল্লাল ফকির। মাঝপথে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে অ্যাম্বুলেন্সে সাথে বাসের ধাক্কা লেগে প্রাণ যায় একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জনের। তবে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান অন্তঃস্বত্তা গৃহবধু রোজিনা আক্তার (৩২)। পরে সন্ধ্যায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন হলে রোজিনার কোলজুড়ে আসে এক ছেলে সন্তান। জন্ম নেয়ার আগেই নবাগত ছেলে হারালো তার বাবাকে। বাবারও দেখা হলো না তিন মেয়ের পরে জন্ম নেয়া একমাত্র ছেলে সন্তানকে। এই কষ্ট পুরো স্বজন ও গ্রামবাসী কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। চলছে শোকের মাতম।

নিহত চারজনের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার মিঠাপুর গ্রামে। নিহতরা হলেন মাওলানা বিল্লাল ফকির (৪০), তার বাবা সামাদ ফকির (৬০), মা সাহেদা বেগম (৫০) ও তার ছোটবোন আফসানা আক্তার (২০) এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক মাহবুব সরদার।

এদিকে একই পরিবারের মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রামজুড়ে শোক নেমে আসে। পাড়া-প্রতিবেশিরা নিহতদের বাড়িতে ভীর করছেন। এছাড়াও নিহতদের পারিবারিক কবরস্থনে পাশাপাশি চারটি কবর খোড়া হয়েছে। একসাথে তাদের সেখানে দাফন করা হবে।

স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় মাওলানা বিল্লাল ফকিরের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী রোজিনা আক্তারকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। মাঝপথে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের নিমতলা এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সের চাকা ফেটে যায়। চালক অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে চাকা পরিবর্তণ করছিলেন। এ সময় কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস চাপা দেয়। এতে মারা যান বিল্লাল ফকির, তার বাবা সামাদ ফকির, মা সাহেদা বেগম ও তার ছোটবোন আফসানা আক্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক মাহবুব সরদার। এই ঘটনায় আহত হন অন্তঃস্বত্তা গৃহবধুসহ ৩ জন। এক সঙ্গে একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জন মারা যাবার ঘটনায় পরিবারসহ গ্রামজুড়ে চলছে শোকের মাতম।

আরো জানা যায়, দুর্ঘটনার পর আহত অন্তঃস্বত্তা রোজিনাকে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় তার সিজারিয়ান অপারেশন করানো হয়। তার একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। সেই সন্তানের মুখ দেখা হলো না বাবা বিল্লাল ফকিরের। তার আরো তিনটি মেয়ে আছে। তারা স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়েন।

প্রতিবেশি মুন্নি আক্তার বলেন, একসঙ্গে একই পরিবারের ৪ জন মারা যাবে এটা কখনই বুঝতে পারিনি। এই শোক আমরা কি করে সইবো। এটা মেনে নেবার নয়। আমরা এই চালকের শাস্তি চাই।

নিহত বিল্লালের ফুফাতো ভাই মাওলানা গোলাম রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জন মারা গেছে। পরিবারের কেউ এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। এই ঘটনায় গোল্ডেল লাইন পরিবহণের চালকের ফাঁসি চাই। বেপরোয়াগতির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, একই সঙ্গে ৫ জন মারা যাবার ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। নিহতদের পরিবারকে এখন সমবেদনা জানানো ছাড়া আর কিছুই দেয়ার নেই। এছাড়া সরকারিভাবে যত ধরণের সহযোগিতা করা যায়, সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন তাদের পাশে থাকবে।

(এএসএ/এএস/মে ০৯, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test