ভাঙ্গায় মধ্যরাতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, দু’জনকে জখম

রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামে ইয়াসিন খালাসি (১৯) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। এসময় ইয়াসিনের সাথে থাকা রায়হান শেখ (২৪) ও শাকিব মাতুব্বর (১৬) নামে অপর দুজনকেও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছে তারা। আহত দুজন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার থানমাত্তা গ্রামের খালের ব্রিজের নিকটবর্তী স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে ইয়াসিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে পাশের একটি ধানক্ষেতে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ইয়াসিনসহ তার দুই সঙ্গীকে ফেলে রেখে যায় স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। আহত তিনজনকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাঙ্গা থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে ইয়াসিনের মৃত্যু হয়।

নিহত ইয়াসিন পেশায় একজন ওয়ার্কশপের শ্রমিক এবং সে ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামে জাহাঙ্গির খালাসীর ছেলে।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিবেশী বাদশা ও রায়হানের সাথে ইয়াসিনের মারামারি হয়। এরপর বিষয়টি স্থানীয়রা মীমাংসাও করে দেন। কিন্তু তারপরে এমন ঘটনায় হতাশ হয়েছে হয়েছেন তারা।

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভাঙ্গা থানার থানমাত্তা গ্রামের খালের ব্রিজে বসে গল্প করছিলেন নিহত ইয়াসিনসহ তিন যুবক। একপর্যায়ে তারা ব্রিজের পাশেই লতিফ শরীফের নির্মাণাধীন ভবনের পাশে আসলে ৮ থেকে ১০ জন কিশোর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে।

এসময় প্রাণে বাঁচতে তারা পাশেই ধানক্ষেতে দিকে গেলে সেখানেও গিয়েও কোপাতে থাকে দুর্বৃত্তরা।

এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ওই কিশোররা পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় ইয়াসিনসহ তিন জনকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে পথিমধ্যে মারা যান ইয়াসিন খালাসি। আহত অপর দুজন রায়হান শেখ (২৪) ও শাকিব মাতুব্বর (১৬) কে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন জানান, 'রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে রাত থেকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

এদিকে, এই ঘটনার জেরে রবিবার (১১ মে) সকালে স্থানীয় প্রতিপক্ষের দুইটি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

(আরআর/এএস/মে ১২, ২০২৫)