E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

গোপালগঞ্জে কোরবানিযোগ্য প্রায় ৪০ হাজার পশু প্রস্তুত

২০২৫ মে ১৫ ১৩:৫২:৫৫
গোপালগঞ্জে কোরবানিযোগ্য প্রায় ৪০ হাজার পশু প্রস্তুত

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : আসন্ন ঈদুল আযহা সামনে রেখে গোপালগঞ্জ জেলায়  কোরবানিযোগ্য ৩৯ হাজার ৭৬৯টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। 

জেলার ৫ উপজেলার ৪ হাজার ৫শ’ ১৭ টি খামারে ঈদুল আযহা উদযাপন উপলক্ষে নিরাপদ মাংসের জন্য এসব গবাদি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। গবাদি পশু মোটা-তাজা করতে কোন প্রকার কেমিকেল বা অপদ্রব্য পুশ করা হয়নি। এখনো জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গবাদি পশু মোটা-তাজা করতে তদারকি অব্যাহত রেখেছে । তাদের পরামর্শে খামারিরা গবাদি পশু মোটাতাজা করছেন। এখন শেষ সময়ে খামারে খামারিরা এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ জেলায় মোটাতাজা করা গবাদি পশুর মাংস মানুষের দেহের জন্য নিরাপদ বলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সরদার জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, কোরবানির জন্য জেলার ৫ উপজেলায় ১৯ হাজার ২৭৬টি ষাঁড়, ১১০টি বলদ, ৫ হাজার ৬৪৪টি গাভী, ১৬টি মহিষ, ১৪ হাজার ৬১৪ টি ছাগল, ৮২টি ভেড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, খড়, গম ও ডালের ভূষি, ঘাস, খৈইল, কুড়া খাইয়ে এসব পশু মোটা-তাজা করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের কোন পশুতে খামারিরা কোন কেমিকেল বা অপদ্রব্য পুশ করেন নি। আমাদের পরামর্শে তারা মানুষের দেহের জন্য নিরাপদ মাংস প্রস্তুত করেছে। এখন এইসব পশু নিরাপদে বাজারজাত করণের জন্য আমরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। ইতিমধ্যেই খামার থেকে গবাদি পশু বিক্রি শুরু হয়েছে।

জেলার ৫ উপজেলার ১৫ টি স্থানে গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রয়ের হাট বসছে । এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩টি, মুকসুদপুরে ৪টি, কাশিয়ানীতে ৩টি, কোটালীপাড়ায় ৪টি ও টুঙ্গিপাড়ায় ১টি পশুরহাট বসছে। এসব হাট তদারকির জন্য ইতিমধ্যে ১৫ টি মেডিকেল টিমি গঠন করা হয়েছে । মেডিকেল টিম গুলো পশুরহাটে সার্বক্ষণিক সেবা দেবে । এছাড়া চামড়া সংরক্ষণের জন্য বিসিকের সহায়তায় আমরা গবাদি পশু ক্রেতাকে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করব। এই লবণ মাদ্রাসাগুলোতেও সরবরাহ করা হচ্ছে।যাতে মাদ্রাসায় আসা পশুর চামড়া সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।

জাল টাকা লেনদেন বন্ধ ও ছিনতাইকারীদের হাত থেকে গবাদি পশু ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুরক্ষায় গোপালগঞ্জের পশুর হাটগুলোতে ক্যাশলেস লেনদেনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রভাস চন্দ্র সেন বলেন, গবাদি পশুর ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে আমরা হাটগুলোতে ইন্ডিয়াসহ অন্যান্য দেশের পশু ক্রয় বিক্রয় নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছি । আশা করছি, খামারিরা কোরবানির হাটে ন্যায্য মূল্যে গবাদি পশু বিক্রি করে লাভবান হবেন। এছাড়া গবাদি পশু পরিবহন নির্বিঘ্ন করতে আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা নিরাপদে কোরবানির পশু পরিবহনে সব ধরনের আশ্বাস দিয়েছে। এসব উদ্যোগের কারণে কোরবানির গবাদি পশু বাজারজাত নিয়ে খামারিরা হয়রানির শিকার হবেন না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ কর্মকর্তা।

মুকসুদপুর উপজেলার হোগলাডাঙ্গা গ্রামের খামারি হাফিজুর রহমান বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরামর্শে আমি নিরাপদভাবে ৩০টি গরু মোটা-তাজা করেছি। এগরুর মাংস মানুষের দেহের জন্য নিরাপদ। এই বছর গো খাদ্যের দাম ছিল খুবই চড়া। তাই গবাদি পশু মোটা তাজা করতে বাড়তি খরচ হয়েছে। ইন্ডিয়া অথবা অন্য দেশ থেকে পশু না আসলে কোরবানির হাটে আমাদের গবাদি পশুর ন্যায্য মূল্য পাওয়ার আশা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আমাদের গবাদি পশু বাজারজাত করতে ব্যাপক ব্যবস্থা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে । শেষ পর্যন্ত গবাদিপশুর ন্যায্য মূল্য পেলে আমরা লাভবান হব। আমাদের সারা বছরের পরিশ্রম সার্থক হবে। ন্যায্যমূল্য না পেলে লোকসানের আশংকা রয়েছে বলেও জানান এ খামারি।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের খামারি আরিফ বলেন, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের নির্দেশনা প্রতিপালন করে এবছর লাভের আশায় ৬০টি গরু মোটাতাজা করেছি। এখানে মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছি। গত বছরের তুলনায় গরু মোটাতাজা করণে এ বছর অন্তত ২০ % অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে। এখন প্রত্যাশিত মূল্য পেলে লাভের মুখ দেখতে পারব । আর যদি বিদেশী গরু পশুরহাট দখল করে তাহলে দেশী গরুর চাহিদা কমবে। এতে পশুর বাজার দর কমে যেতে পারে । সেক্ষেত্রে লোকসানের আশংকা প্রকাশ করেন ওই খামারি। তিনি হাটে বিদেশী গরুর আমাদানী ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানান।

(এএসএ/এএস/মে ১৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩১ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test