E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে কোটিপতি বনে যাওয়া আশরাফুল ইসলামকে বদলী

২০২৫ মে ২৬ ১৭:২১:১০
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে কোটিপতি বনে যাওয়া আশরাফুল ইসলামকে বদলী

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক মোঃ আশরাফুল ইসলামকে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার অভিযোগে বদলি করা হইয়াছে।

গত শনিবার (২৪ মে) বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ঢাকার স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মোছা: সেলিনা বানু স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে আশরাফুলকে কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলায় বদলির নোটিশ পাঠানো হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (২৫ মে) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সোনারগাঁ হইতে বদলিকৃত কর্মস্থল তাড়াইল উপজেলায় যোগদানের নিমিত্তে তাকে অবমুক্ত করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পুনরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পরিষদ নির্বাচন বলবৎ করলে নির্বাচনের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদ গঠিত হয়। আর তখনি উপজেলা পরিষদের অর্গানোগ্রামে সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদ সৃষ্টি করে এবং তার নিয়োগের ক্ষমতা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অর্পণ করা হয়। এবং ২০১৬ সালে সাট-মুদ্রাক্ষরিক নিয়োগের লক্ষ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর আশরাফুল ইসলাম (রাজু)'র পিতা মো. হানিফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সোনারগাঁ এর বাসভবনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার পিতা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হওয়ায় পাতানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে সে উপজেলা পরিষদের সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে নিয়ম বহিঃর্ভূত ভাবে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তার দায়িত্বে নিয়ে নেন।

বিশেষ করে উপজেলা পরিষদ রাজস্ব তহবিল, উন্নয়ন তহবিল এবং প্লান পাস এর ফাইল তার হেফাজতে থাকে। ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ০৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখের পূর্ব পর্যন্ত সরকারের এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের একান্ত সহযোগি হিসেবে, গত ১০ (দশ) বছরে নামে বেনামে ৬০০ পিআইসি প্রকল্প দেখিয়ে, বার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। তার নেয়া গায়েবী প্রকল্প যা কাগজে কলমে প্রকল্প ছিল এবং বিভিন্ন জনকে প্রকল্প সভাপতি দেখিয়ে নিজেই স্বাক্ষর দিয়ে টাকা উঠিয়ে আত্মসাৎ করেছেন, এমনকি অধিকাংশ প্রকল্পের কোন নথিপত্রই নেই, শুধুমাত্র চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করা হইয়াছে। তাছাড়া বাড়ি করার ছাড়পত্রের ফাইল করা, প্রতিটি বাড়ি/কোম্পানীর প্লান পাস (ছাড়পত্র) অনুমোদনের জন্য ১/২ লক্ষ টাকা করে নিতেন।

পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ছেলে হয়েও অল্প দিনেই তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যান। তার নামে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগাঁয়ে কয়েকটি বাড়ি ও বেনামে অনেক সম্পত্তির মালিক তিনি। সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিসে খোজ নিলে তার সত্যতা পাওয়া যায়। কিছুদিন পূর্বে কাঁচপুরে মায়ের নামে সম্পতি নিয়ে বর্তমানে নিজের নামে হেবা করে নিয়েছেন। গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এডিপির বিশেষ বরাদ্দ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা এনে নিজেই কাজ করাচ্ছেন। উক্ত কাজ সমাপ্তির নামে নানা তালবাহানা করছেন বলে জানা যায়। তিনি সরকারি বাসা হতে গ্যাস বিলের নাম করে ১০ বছরে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ আছে। সচেতন মহলের জিজ্ঞাসা, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ছেলে হয়েও এত অল্প সময়ে কি ভাবে বিত্তবৈভবের মালিক হলেন।

এ বিষয়ে আশরাফুল ইসলাম বলেন, বদলিজনিত বিষয় হলো গত এক মাস আগে সারা বাংলাদেশে সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটরদের বদলির নির্দেশনা আসে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমার বদলি হয়েছে। দুর্নীতির বিষয়ে আমি জানি না। তবে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী উঠেছে।

(এসবি/এসপি/মে ২৬, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test