E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা

২০২৫ জুন ০১ ১৭:৪৮:৪৫
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা

# ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনায়েম লিমিটেড এর কাজে ধীরগতি

# মহাসড়ক ঘেঁষে পশুর হাট

# লিংক রোডগুলোর মাথায় ট্রাফিক অব্যবস্থাপণা

মোহাম্মদ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা করছেন যাত্রীরা। সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইল প্রান্তে প্রায় ৪ বছরে ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এতে মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপসহ নানা কারণে ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষের যানজটে চরম ভোগান্তির শঙ্কা করছেন যাত্রী ও চালকরা। তবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের দাবি, ঈদে চার লেনের সুবিধা পাবেন ঘরমুখী মানুষ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার দাবি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের। আর জেলা পুলিশ বলছে, ঈদযাত্রায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কে পালাক্রমে সাড়ে ৬০০ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। 

জানা গেছে, সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত চার লেন চালুর কথা থাকলেও বেশির ভাগ অংশে মূল সড়কের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখনো সড়কের কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। ঈদে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলাচল ও দ্রুত পারাপারের জন্য সেতুতে অতিরিক্ত টোল বুথ চালু করা হবে। এ ছাড়া সেতুর ওপর দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহন উদ্ধারে রেকার ব্যবস্থা থাকবে।

গত ৫ আগস্টের পর মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত তেমন কাজ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে ঈদ ঘনিয়ে আসায় টুকটাক সড়কের কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

“# মহাসড়কে থ্রি হুইলারের ব্যাপক চলাচল। # পশু পরিবহনে নসিমন, করিমন ও ভটভটির ব্যবহার। # পুরনো ফিটনেস বিহীন গাড়ির চলাচল। # টোলপ্লাজায় গাড়ির ভীড়। # মহাসড়কে ব্যাক্তিগত পরিবহন ও মোটরসাইকেলের আধিক্য। # পশুবাহী ট্রাক ও পিক-আপের দখলে মহাসড়ক। # উল্লেখিত বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে উত্তর জনপদের মানুষের স্বস্তির ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করতে মাঠে থাকবে ৬ শত পুলিশ।”

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। ৪২ মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৪০ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছে বাকি ৬০ শতাংশ কাজ ৭ মাসে কিভাবে সম্পন্ন করে সেটাই দেখার বিষয়।

মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা বলছেন, টাঙ্গাইল অংশ দিয়ে উত্তরাঞ্চলসহ আশপাশের ২৩ জেলার লাখ লাখ মানুষ মহাসড়কটি ব্যবহার করেন। ঈদে চার লেনের কাজ শেষ না হওয়ায় কয়েক গুণ বেশি যানবাহনের চাপসহ নানা কারণে চরম ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে। তবে পর্যাপ্ত পুলিশ থাকলেও ট্রাক চলাচল না করলে যানজট হবে না। এ ছাড়া এলোমেলো গাড়ি চলাচল বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন যাত্রী ও চালকরা।

হানিফ পরিবহনের চালক মুহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়মিত এই রোডে যাতায়াত করি। কিন্তু ঈদ এলে এলেঙ্গার পর থেকে ভোগান্তি শুরু হয়। এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের কাজ চলার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয়।’

এনা পরিবহনের চালক শাকিল মিয়া বলেন, ‘বর্তমানে রাস্তায় ভোগান্তির পাশাপাশি ডাকাতির ভয় নিয়ে চলাচল করতে হয়। দুই দিন পর পর বাসে ডাকাতি হচ্ছে। ঈদে মহাসড়কে যেন পর্যাপ্ত পুলিশ থাকে, সেদিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।’

শাজাহান নামে বগুড়ার এক যাত্রী বলেন, ‘ঈদে মহাসড়কে ট্রাক যদি না চলে তাহলে গত ঈদের মতো নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারব। আমরা চাই যাতে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে পারি।’

এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক সৈকত হোসেন বলেন, ‘আমরা হাইওয়ে পুলিশ সব সময় মহাসড়কে টহলে থাকি। আশা করছি, নিরাপদে ঘরমুখী মানুষ বাড়ি ফিরতে পারবেন।’

এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত মহাসড়কে কাজ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনায়েম লিমিটেডের ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার সমরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘২০১৬ সালে একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এ অংশের কার্যাদেশ পায় আব্দুল মোনায়েম লিমিটেড। ২০২৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তি লাঘবে মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। এ ছাড়া ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কে প্রায় সাড়ে ৬০০ পুলিশ ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করবেন।'

(এসএম/এসপি/জুন ০১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩১ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test