E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ধামরাইয়ে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু, এলাকায় আতংক

২০২৫ জুন ০৩ ০০:২৫:২১
ধামরাইয়ে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু, এলাকায় আতংক

দীপক চন্দ্র পাল, ধামরাই : ঢাকার ধামরাইয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে মেয়ে নাসরিন আক্তার সকাল থেকেই মোবাইল ফোনে মা ও ভাইকে ১০-১২ বার কল করেও কোনো উত্তর না পেয়ে দুপুরের দিকে বাবার বাড়িতে এসে ঘরের দরজা ভেঙে খাটের ওপর দেখতে পান মা ও তার দুই ভাইয়ের লাশ।

সোমবার ধামরাই উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে তাদের কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারেনি। তবে আলামত হিসেবে ও পরীক্ষা করার জন্য ঘরের মধ্যে থাকা ভাত ও ভাজা ডিম জব্দ করেছে পুলিশ। রহস্যজনকভাবে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকায় আতংক ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় পুলিশ তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছেন।

এদিকে বছরখানেক আগে নিহতদের পরিবারের কর্তা ডেকোরেটর ব্যবসায়ী রাজা মিয়াও একইভাবে ঘরের ভেতর মারা গিয়েছিলেন। বছর না ঘুরতেই একইভাবে সেই কক্ষের ভেতরই সোমবার রহস্যজনকভাবে রাজা মিয়ার স্ত্রী নার্গিস বেগম (৪৫), দুই ছেলে শামীম হোসেন (১৭) ও সোলায়মান হোসেনের (৬) মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামের রাজা মিয়া ডেকোরেটরের ব্যবসা করতেন। বছরখানেক আগে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে মারা যান। মেয়ে নাসরিন আক্তারের আড়াই বছর আগে ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রবিন হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। রাজা মিয়া মারা যাওয়ার পর তার ডেকোরেটরের ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন মেয়ের জামাই রবিন ও শ^াশুড়ি নার্গিস বেগম। গত আড়াই মাস আগে ওই ডেকোরেটরের ব্যবসাও বিক্রি করে দেওয়া হয়। এলাকার অনেকের ধারণা, ডেকোরেটরের ব্যবসা ও বিক্রি করা নিয়ে পারিবারিক কলহও ছিল।

তবে মেয়ে নাসরিন আক্তার বলেন, তাদের পরিবারে তেমন কোন কলহ ছিল না। তবে কি কারণে তার মা ও দুই ভাই মারা গেছেন তা বলতে পারছেন না তিনি।

নাসরিন আক্তার আরও বলেন, রোববার রাতেও ফোনে তার মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। মা ও দুই ভাই তাদের জন্য ঈদের উপহার নিয়ে সোমবার তার শ^শুর বাড়ি আসার কথাছিল। সোমবার সকালে আসতে দেরি করায় ১০-১২ বার ফোন করেও রিসিভ না করায় দুপুর ২টার দিকে তিনি বাবার বাড়িতে আসেন। এসময় ঘরের বাইরে লাইট জ্বলতেছে ও ঘরের ভেতর ফ্যান চলার শব্দ পাই। এরপর দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে দেখি মা ও দুই ভাই খাটের ওপর পড়ে আছেন। তবে কিভাবে তারা মারা গেছেন তা জানেন না বলে জানান তিনি।

নিহতের চাচাতো দেবর শহিদুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে ডেকোরেটরের মালামাল বিক্রি করে দেওয়া নিয়ে মেয়ের জামাই রবিনের সাথে তার স্ত্রী নাসরিনের প্রায়ই বিবাদ হতো। অপরদিকে নিহতরা যে জমিতে বাস করতেন তার মধ্যে আট শতাংশের মালিক নিহত রাজা মিয়ার সৎ মা রংমালার নামে। ওই জমি নিয়েও গত চার মাস আগে তাদের মধ্যে সালিশ হয়।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, মা ও দুই সন্তানের মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। তাদের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যায়নি। তাদের মৃত্যু রহস্যজনক ও লোমহর্ষক। আলামত হিসেবে ও পরীক্ষা করার জন্য বাড়ির রান্না করা ভাত ও ভাজা ডিম জব্দ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

(ডিসিপি/এএস/জুন ০৩, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩১ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test