E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

গোপালগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রের হাত ভেঙ্গে দিলেন শিক্ষক!

২০২৫ জুন ০৩ ১৫:৩১:০১
গোপালগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রের হাত ভেঙ্গে দিলেন শিক্ষক!

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : পড়া না পারায় বেত দিয়ে পিটিয়ে ও ধাক্কা দিয়ে ফেলে হাত ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে হামিম শেখ (৮) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রের। ভাঙ্গা হাত নিয়ে ওই শিক্ষার্থী এখন নানা বাড়িতে শয্যাশায়ী । বন্ধ রয়েছে তার লেখাপড়া। এ নিয়ে মাদ্রাসার ছাত্র-অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার (১ জুন) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী-পবনাড়পাড় মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। হামিম শেখ ওই উপজেলার গোপালপুর গ্রামের রুহুল আমিন শেখের ছেলে।

ঘটনার দিন মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ মোঃ ইব্রাহিম খলিলুর রহমান হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী হামিম শেখকে (৮)পড়া জিজ্ঞাসা করেন। সে পড়া পারেনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষক বেত দিয়ে বেদম প্রহার করেন । এই প্রহারে হামিম অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে নানী সোনাই বেগম মাদ্রাসা থেকে উদ্ধার করে দ্রুত কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে পরিক্ষা নিরীক্ষায় হামিমের বামহাত ভাঙ্গা্ সনাক্ত হয়।পরে চিকিৎসকরা তার হাত ব্যান্ডেজ করে দেন। তারপর থেকে নানা বাড়িতে শয্যাশায়ী রয়েছে ওই শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থী হামিম শেখ বলে, ইব্রাহিম খলিল হুজুর আমার কাছে পড়া জিজ্ঞেস করেন। আমি পড়া পারিনি। এ কারণে হুজুর আমাকে বেত দিয়ে খুব পেটায় । একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে আমার হাত ভাইংগা (ভেঙ্গে) যায়। হুজুর এর আগেও আমাকে অনেকবার মারেছে । শুধু আমাকেই না, পড়া না পারলে হুজুর সবাইরেই বেত দিয়ে পেটায়। এ পেটানোর কথা বাড়িতে বলতে নিষেধ করে। এই জন্য আগে যতোবার মারছে আমি বাড়িতে কই নাই।

নানী সোনাই বেগম বলেন, আমি হামিমের জন্য খাবার নিয়ে মাদ্রাসায় যাই। গিয়ে দেখি মাদ্রাসার এক কোনায় শুয়ে সে কাদছে।তখন, ইব্রাহিম খলিল হুজুরকে হামিমের কান্নার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন পড়ে গিয়ে ব্যাথ্যা পেয়েছে। আমি হামিমকে বাড়ি নিয়ে এসে ওর জামা খুলে দেখি সারা শরীরে বেত দিয়ে পিটানোর দাগ। বাম হাতটি খুব ফুলে আছে। এরপর হামিমের কাছে শরীরের দাগের বিষয়ে জানতে চাইলে আমাকে জানায় ইব্রাহিম হুজুর তাকে বেত দিয়ে পিটিয়েছে।এরপর হামিমকে চিকিতসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা হাত ভাঙ্গা দেখে প্লাস্টার করে ওষুধ দিয়ে দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য ওই মাদ্রাসায় গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মোঃ ইব্রাহিম খলিলকে পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মোহতামিম হাফেজ মুফতি আব্দুল্লাহ আল হাফিজ বলেন, হেফজ বিভাগের ছাত্র হামিমকে শাষণ করতে গিয়ে ওস্তাদ অতিরিক্ত শাষণ করেছেন। যা খুবই অন্যায় হয়েছে। এ বিষয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভা আহবান করা হয়েছে। এ সভায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কুমার মৃদুল দাস বলেন, ওই শিক্ষার্থীর বাম হাত ভেঙ্গে গেছে। তার হাত ব্যান্ডেজ সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আশাকরা হচ্ছে ১ মাসের মধ্যে শিশুটি সুস্থ স্বাভাবিক জীবণে ফিরবে।

(টিজি/এএস/জুন ০৩, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test