E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

শেষ সময়েও জমছে না সাতক্ষীরার পশুর হাট

২০২৫ জুন ০৪ ১৯:৩৬:১৭
শেষ সময়েও জমছে না সাতক্ষীরার পশুর হাট

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : শেষ দিকেও জমছে না সাতক্ষীরায় পশু হাটের কেনা-বেচা। ক্রেতা সংকটে তাই হাটগুলো। ক্রেতারা দাম বেশির অভিযোগ করলেও বিপরীত বক্তব্য বিক্রেতাদের। গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় লোকসান হচ্ছে তাদের। এদিকে গরু-কেনা-বেচা কম হওয়ায় লোকসান যাওয়ার আশঙ্কা হাটমালিকদের।

তিনদিন পরেই ঈদুল আযহা। সাতক্ষীরার সবচেয়ে বড় গরুর হাট আবাদের হাটে মঙ্গলবারে গরু কেনা-বেচা খুবই কম। বিক্রি করতে আসা গরুর সংখ্যাও অন্যান্য বারের চেয়ে কম। আজ বুধবার জেলার তৃতীয় বৃহত্তম পশুর হাট পাটকেলঘাটাতেও একই অবস্থা।

সরেজমিনে জানা গেছে, আবাদের হাটে গরু বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে। এতেও ক্রেতাদের সাড়া মিলছেনা। বিক্রেতাদের অভিযোগ, গরুর খাবারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এদামেও বেচা কঠিন। আর ক্রেতাদের আকাঙ্খা, এর চেয়েও কম দাম।

পাটকেলঘাটা হাটে বিনেরপোতা এলাকা থেকে গরু কিনতে আসা মাহতাবউদ্দীন জানান, ‘‘৩ মণের বেশি মাংস হবেনা, এমন গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আমার কাছে এই গরুটার দাম সর্বোচ্চ ৯০ হাজার টাকা।’’

গরুর ব্যাপারী আরশেদুল ইসলাম জানান, ‘‘১০টি মাঝারি সাইজের গরু নিয়ে আসছিলাম। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ৪টি বিক্রি করতে পারছি। বাকীগুলো বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে হবে মনে হয়।’’

বিগত কয়েক বছর আগেও সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে আসত হাজার-হাজার গরু। তবে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তে বর্তমানে তা বন্ধ থাকায় জেলায় বেড়েছে খামার ও খামারীদের সংখ্যা।২ বছরের ব্যবধানে ১০ হাজার খামারের বিপরীতে খামার হয়েছে ১২ হাজার ৮৯৪ টি।
গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে অনেকগুন। তবে সে অনুপাতে গবাদিপশুর দাম বাড়েনি। গত বছর ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকা মণ দরে গরু বিক্রি হলেও এবার তা ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে। লোকসান গুনবার আশঙ্কায় তাই হতাশ খামারীরা।

নিজ খামার থেকে আবাদের হাটে গরু নিয়ে আসা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের সরকারি চাকুরীজীবি কামরুজ্জামান জানান, তিনি দুটি গরু ও ১৮ টি ছাগল পালন করেছেন ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিক্রির জন্য। গরু বিক্রি করে লোকসান হলেও ছাগল বিক্রি করে তা পুষিয়ে যাওয়ার পরও লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়েছে।

গরুতে লোকসানের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে অনেকগুন। বিচালি, কুড়া, খৈলসহ সমস্ত জিনিসের দাম কয়েকবছরের মধ্যে দ্বিগুন হয়েছে। তবে সে অনুপাতে মাংসের দাম বাড়েনি। খামারগুলোকে বাচিয়ে রাখতে সরকারের উচিৎ গো-খাদ্যের সাথে মাংসের দামের সামঞ্জস্য রাখা।’’

গরু কেনা-বেচা কম থাকায় অর্ধকোটি টাকা ইজারা নিয়ে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন আবাদের হাটের ইজারাদার ফারুক রহমান।

তিনি বলেন, ‘‘এবার হাটে কেনা-বেচা খুবই কম। ছোট কিছু গরু বিক্রি হচ্ছে। বড় গরুর ক্রেতা নেই।’’

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার স্থায়ী হাট বসানো হয়েছে ১১টি। এছাড়া বেশ কিছু অস্থায়ী হাট রয়েছে। ১ লাখ ৬০৬টি গবাদি পশু প্রস্তুত আছে। চাহিদা আছে ৮৫ হাজার ৩১৮টি। উদ্বৃত্ত রয়েছে ১৫ হাজার ২৮৮টি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ( অতিরিক্ত দায়িত্বে)ডাঃ বিষ্ণুপদ বিশ্বাস জানান, ‘‘পশুর হাটে যাতে রুগ্ন পশু বিক্রি না হয়,তার জন্য আমাদের তদারকি চলমান রয়েছে।’’

(আরকে/এসপি/জুন ০৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test