দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ৩ বাসের ধাক্কায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ২  

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ৩ টি বাসের ধাক্কায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নৌ বাহিনীর এক কর্মকর্তা সহ আহত হয়েছে  আরো অন্তত ১৫ জন।  শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে ঢাকা খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মেরী গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এ দুর্ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এ সময় প্রায় ৩ ঘন্টা ওই মহাসড়কের ওই স্থানে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

নিহতরা হলেন ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের এটিএসআই(ATSI) রফিকুজ্জামান (৫৮) ও আরমান পরিবহনের হেলপার খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গা এলাকার আব্দুল হামিদ ব্যাপারীর ছেলে সেলিম হোসেন ব্যাপারী (৪৩)।

নিহত পুলিশ সদস্য রফিকুজ্জামনের বাড়ি ফরিদপুর জেলার সালতায়। আহত ৬ জনকে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক মোঃ মাকসুদুর রহমান মোরাদ জানান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটি ট্রাক দাড়িয়ে ছিল। রাত আড়াইটার দিকে ট্রাকের্ পিছনে ধাক্কা দেয় আরমান পরিবহনের একটি বাস। এতে আরমান পরিবহনের হেলপার সেলিম হোসেন ব্যাপারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা উদ্ধার কাজ শুরু করেন। রাত ৩ টার দিকে ঘটনাস্থলের অদূরে সাতক্ষীরা এক্সপ্রেসের একটি বাস একটি প্রইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে প্রাইভেট কারটি রাস্তার পাশ্ববর্তী খাদের গাছের সাথে আটকে যায়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই স্থানে এসপি গ্রীন লাইনের একটি বাস দুর্ঘটনা কবলিত আরমান পরিবহনকে ধাক্কা দেয়। এরপর চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা খুলনা গামী নিউ বলেশ্বর পরিবহনের একটি বাস দুর্ঘটনা কবলিত ২টি বাস ও ট্রাককে ধাক্কা দিলে চতুর্মুখী সংঘর্ষ হয়।

এ সময় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের এটিএসআই(ATSI) রফিকুজ্জামান ও গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য কায়রুল ইসলাম (৩২)সহ ১৫ জন আহত হন। আহত পুলিশ কর্মকর্তা রফিকুজ্জামানকে প্রথম কাশিয়ানী উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারযান। আহত ৬ জনকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাত ২টা ৩০ মিনিট থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সড়ক থেকে দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও ট্রাক ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, আরমান, এপি গ্রীন লাইন ও নিউ বলেশ্বর পরিবহনের বাস ৩টি দুমড়ে মুচড়ে যায়।

খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মালেক আলী সরদারের নেতৃত্বে গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত সাড়ে ৩ টা থেকে উদ্ধার কার্য পরিচালনা করে ।

গোপালগঞ্জ আড়াই শ' বেড জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উত্তম রায় বলেন, “প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে আরমান পরিবহনের চালক ইব্রাহিম সহ দু’ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”

(টিপি/এএস/জুন ১৫, ২০২৫)