E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব এখন সোনারগাঁয়ের মূর্তিমান আতঙ্ক

২০২৫ জুন ২৭ ২০:৫৪:৫৯
জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব এখন সোনারগাঁয়ের মূর্তিমান আতঙ্ক

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব এখন সোনারগাঁয়ের মূর্তিমান আতঙ্ক। নিজ হাতে গড়ে উঠা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে,নৌ-চাঁদাবাজী থেকে শুরু করে দাপটের সাথে চর দখলের মত, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩৮টি শিল্প-কারখানায় দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ঝুট,স্ক্রাবসহ বিভিন্ন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে উপজেলার সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুখে গত ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গা-ঢাকা দেন। এই সুযোগে থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান'র ছেলে সজিব ও তার সহযোগীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বিভিন্ন লোকজনের বাড়িঘরে হামলা, পিরোজপুর ইউপির সাবেক মহিলা সদস্য মমতাজ বেগমকে তার বাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়া, সোনারগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুজ্জামান অপু ও সহকারী অধ্যাপক খন্দকার দিল আফরোজকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়াসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।

এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলায় আসামি করার হুমকি দিয়ে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় সে ও তার লোকজন। তাছাড়া মামলা করার পর বাদীকে দিয়ে আদালতের মাধ্যমে আসামির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে আরেক দফা অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় যে ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে তা সম্পূর্ন উদ্দেশ্য প্রনোদিত।

উল্লেখিত মামলা গুলোর প্রকৃত ঘটনাস্থল ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানীনগর ও রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকা। অথচ হতাহতের পবিবারের লোকাজনকে তখন টাকা দিয়ে ঘটনাস্থল সোনারগাঁ দেখিয়ে মামলা দায়ের করা হয় বলে জানা গেছে। উল্লেখিত মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী,সাধারণ ব্যবসায়ী ও দিনমজুর লোকজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েক হাজার সাধারণ মানুষকে আসামি করা হয়। একই সাথে নিরীহ মানুষকে মামলায় আসামি করে তাদের ঘরবাড়ি দখল,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, শিল্প কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে নেয় খাইরুল ইসলাম সজিব। এরই মধ্যে মান্নান'র ছেলে সজিবের বিতর্কিত কর্মকান্ডে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া মান্নান পুত্র খাইরুল ইসলাম সজীবের বিরুদ্ধে নৌ চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রনের অভিযোগ রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার এর সময় যুবলীগ নেতা পলিথিন জাকির মেঘনা নদীর সীমানাজুড়ে উপজেলার নুনেরটেক থেকে চর কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে তার লোকজন নিয়মিত চাঁদা উত্তোলন করতো। আর এখন সজিব এসব চাঁদাবাজি নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে,সেই পলিথিন জাকির'র মাধ্যমেই তার বাহিনী দিয়ে চাঁদাবাজী করে আসছে বলে জানা গেছে। খাইরুল ইসলাম সজিব ও তাদের বাহিনী এলাকার জনসাধারণের কাছে যেন এক মূর্তিমান আতঙ্ক।

তার বাহিনী প্রতাবেরচর, ঝাউচর গ্রামের সাধারণ মানুষের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ রয়েছে। তার ভয়ে প্রতাবেরচর, ঝাউচর ও আষাড়িয়ারচর গ্রামের ব্যবসায়ীরা এখন এলাকা ছাড়া। শুধু তাই নয়,মেঘনা গ্রুপের ৩টি ইকোনমিক জোনসহ ৩৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান দখলে নিয়েছে সে।

সম্প্রতি গত ২৫ জুন চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন সজিব বাহিনীর ১২জন। তারা এখন বান্ছারমপুর থানা হাজতে আছে।

এ ব্যাপারে খায়রুল ইসলাম সজিব'র সাথে যোগাযোগ করা হলে,তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবী করেন।

(বিএস/এএস/জুন ২৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test