E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে­ক্সে চিকিৎসক সংকট চরমে ভোগান্তিতে রোগী

২০২৫ জুন ২৯ ১৫:১২:০২
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে­ক্সে চিকিৎসক সংকট চরমে ভোগান্তিতে রোগী

সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া : গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ১০০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লে­ক্সেটি দীর্ঘদিন যাবত চিকিৎসক সংকট ভুগছে। বর্তমানে চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে।

সরকারি এই হাসপাতালটিতে ডাক্তার থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সংকট ও রয়েছে । চতুর্থ শ্রেণির পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কর্মচারী ৫ জনের মধ্যে ৩ জনই নেই। মাত্র ২ জন কর্মচারী জোড়াতালি দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় কাক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগী।

কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, এ স্বাস্থ্য কমপ্লে­ক্সে ৩১ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ২৩ জন কর্মরত রয়েছেন। বাকি ৮ জন চিকিৎসক দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন হাসপাতালে ডেপুটেশনে আছেন ।

বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে এসব চিকিৎসকগণ নিজ নিজ সুবিধা মতো হাসপাতালে ডেপুটেশন নিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে­ক্সে সূত্রে জানা যায়, কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হলো মেডিসিন। এ বিভাগের রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট হলেন ডা: মো: মিজানুর রহমান। তিনি অনেক আগ থেকেই ঢাকার মহাখালীর ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে ডেপুটেশনে রয়েছেন। তাছাড়া কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: মাকসুদা রয়েছেন গাজীপুর জেলা কারাগার হাসপাতালে। ডা: সোহেল রানা ও ডা: জহিরুল ইসলাম রয়েছেন কাশিমপুর কারাগার হাসপাতালে। ঢাকার কর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আছেন ডা: আমিনা বেগম, টঙ্গী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছেন ডা: আফরোজা আক্তার। কাপাসিয়া সরকারি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: ইমরান হোসেন আছেন গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এবং ডা: ফারিয়াল মান্নান আছেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে।

কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: হাবিবুর রহমান জানান, কাপাসিয়া উপজেলায় ৪ লাখের অধিক মানুষের বসবাস। প্রতিদিন বহি: বিভাগে ৮০০ থেকে ১০০০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। বিশেষ করে রোববার রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। রোববারে ১২০০ থেকে ১৩০০ রোগি চিকিৎসা নিতে আসে। পাশের শ্রীপুর, মনোহরদী, কালীগঞ্জ সহ কোন উপজেলায়ই কাপাসিয়া সরকারি হাসপাতালের মতো এত রোগী চিকিৎসা নিতে কখনো আসেনা। তিনি আরো জানান, আমাদের এ হাসপাতালে বর্তমানে নাক, কান, গলা, চক্ষু, অর্থপেডিক্সের কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এক সময় কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নাক, কান, গলা, চক্ষু, অর্থপেডিক্স, মেডিসিনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলো।

তিনি জানান, হাসপাতালে পদ আছে কিন্তু ডাক্তার নেই। পদ আছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নেই। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিকিৎসক ও কর্চারির চাহিদা প্রেরণা করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পোস্টিং হয়নি। তিনি অবিলম্বে এসব ডেপুটেশন বাতিল করে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের যোগদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

তরগাঁও বাসিন্দা আবু সায়িদ মোল্লা বলেন, কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব দীর্ঘদিনের। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ডেপুটেশনের থাকায় জনগণ চিকিৎসা সেবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ হাসপাতালে কর্মরত অনেক চিকিৎসক নিয়মিত হাসপাতালে আসেন না বলে ও তিনি মারাত্মক অভিযোগ তুলেন।

সব মিলিয়ে , ডাক্তার অনুপস্থিতি ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর অভাবে এলাকার জনগণ চিকিৎসা সেবাও থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কাপসিয়া বাসী।

(এসকেডি/এএস/জুন ২৯, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test