E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

 

বিয়ের প্রলোভনে যুবতীকে অপহরণের পর ধর্ষণ, স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে অনশন ব্যর্থ 

২০২৫ জুলাই ০২ ১৯:৩৯:৪১
বিয়ের প্রলোভনে যুবতীকে অপহরণের পর ধর্ষণ, স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে অনশন ব্যর্থ 

কেন্দুয়া প্রতিনিধি : মোবাইল ফোনে সম্পর্ক স্থাপন করে বিয়ের প্রলোভন দেখিলে এক যুবতীকে অপহরণের পর একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ওই যুবতী প্রেমিকের বাড়িতে দুই দিন অনশন করার পর ব্যর্থ হয়ে প্রেমিক ও প্রেমিকের মা-বাবাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৩০ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ওই মামলাটি দায়ের করেন গার্মেন্টস কর্মী কতিগ্রস্থ যুবতীর মা। 

জানা যায়, যুবতীর প্রেমিক তমজিদ আহম্মেদের বাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের চন্দলারা গ্রামে। চন্দলারা গ্রামের তমজিদ আহম্মেদ ওই যুবতীর বাবার সাথে বিদেশে চাকুরী করতেন। সেই সুবাধে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয় যুবতীর বাবার সাথে। কয়েক বছর চাকুরী করার পর যুবতীর বাবা বিদেশ থেকে চলে আসেন বাড়িতে। তমজিদ বিদেশেই থেকে যান। কিন্তু মোবাইল ফোনে ওই যুবতীর বাবার প্রায়ই খোঁজ খবর নিতেন তমজিদ। একদিন তমজিদ বিদেশ থেকে ওই যুবতীর বাবার কাছে ফোন করলে ওই ফোনটি রিসিভ করেন যুবতী। যুবতীর মা দাবি করেন সেদিন থেকেই তার কন্যার সাথে কন্যার মোবাইল ফোন নাম্বারে নিয়মিত কথা বলা শুরু করেন তমজিদ। গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক। যুবতীকে আশ্বস্থ করেন বিদেশ থেকে এসে তাকে নিয়ে বিয়ের পিরিতে বসবেন। চলতি বছরের গত ৪ জুন বাড়িতে আসেন তমজিদ।

যুবতীর মা বলেন, তমজিদ বিদেশ থেকে এসেই তাদের বাড়িতে আসেন। কিন্তু যেহেতু বিদেশ থেকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার কন্যার সাথে কথাবার্তা বলতো সেজন্য বাড়িতে আসার পর তমজিদের সাথে কন্যাকে কথা বলতে মানা করেনি। কিন্তু তমজিদ তাকে কৌশলে তাদের বাড়ি থেকে যুবতীকে ওই দিনেই তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পরিত্যাক্ত একটি ঘরে ধর্ষন করে। এরপর বাড়িতে না রেখে ভৈরবে একটি হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে ওই যুবতীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। সেখান থেকে বাড়িতে আসার পর যুবতীর বাবার সাথে বিয়ের আলাপ আলোচনার দিন তারিখ ঠিক করতে বলা হলে তমজিদ সটকে পড়েন। একপর্যায়ে তমজিদ তাকে বিয়ে করতে অসম্মতি জানান। অসহায় যুবতী সবকিছু হারিয়ে গত সপ্তাহে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন তমজিদের বাড়িতে। পরে গ্রাম্য মাতাব্বরদের হস্ত্যক্ষেপে একটি সালিশ বৈঠক হয়।

যুবতীর মা অভিযোগ করে বলেন, ওই সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিয়ের ব্যবস্থা না করে তমজিদের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে দিতে চেয়েছিল সালিশদারগণ। কিন্তু এতে আমার মেয়ে রাজি হয়নি। আমার মেয়ের দাবি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তমজিদ তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। করেছে একাধিকবার ধর্ষন। সমাজে তার ইজ্জত সম্মান নষ্ট হয়েছে। তার সম্মান বাঁচাতে হলে তমজিদ তাকে বিয়ে করতে হবে।

তিনি বলেন, বিয়েতে রাজি না হওয়ায় গত ৩০ জুন আমি বাদী হয়ে আমার কন্যাকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও এই কাজে সহায়তার জন্য তমজিদ ও তার মা-বাবাসহ তিন জনকে আসামী করে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি। ক্ষতিগ্রস্থ ওই যুবতীর দাবি তমজিদ আমার সরলতার সুযোগে আমাকে তার বাড়িতে এবং তার বাড়ি থেকে ভৈরবে হোটেলে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। আমাকে বিয়ে করবে সেজন্য আমি তার কাছে ইজ্জত বিলিয়ে দিয়েছি। হয় সে আমাকে বিয়ে করবে না হয় আমি তার ফাসি চাই। এ ব্যাপারে তমজিদ আহম্মেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন তমজিদ। বাড়িতে নেই তমজিদের মা-বাবাও।

সরজমিন গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বলেন, তমজিদ সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছে কিন্তু বিয়ে করতে রাজি হয়নি। আমরা তো জোর করে বিয়ে দিতে পারবো না। তাই ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েটিকে দুই লাখ টাকা তমজিদের কাছ থেকে নিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যুবতী ও তার পরিবারের সদস্যরা এতে রাজি হয়নি। এখন থানায় মামলা হয়েছে। তদন্তে যা সত্য প্রমাণিত হবে আমরা সেই ঘটনার বিচার চাই।

কেন্দুয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক এসআই জাহিদুল হাসানিআজ বুধবার বিকেলে জানান, এ ঘটনায় তমজিদ সহ তিনজনের বিরুদ্ধে অপহরণের পর ধর্ষনের অভিযোগ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ ওই যুবতীর মা। তদন্ত চলছে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

(এসবি/এসপি/জুলাই ০২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test