E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

আদালতের দ্বারস্থ পরিবার

বোয়ালমারীতে দানের ৯ শতাংশ জমি মিউটেশনে ১৬ শতাংশ! 

২০২৫ জুলাই ০৭ ১৯:৫২:০৮
বোয়ালমারীতে দানের ৯ শতাংশ জমি মিউটেশনে ১৬ শতাংশ! 

কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের বনমালিপুর গ্রামে মসজিদের নামে দান করা ৯ শতাংশ জমি নিয়ে চলছে বিরোধ। অভিযোগ উঠেছে—মসজিদকে ঘিরে প্রতিষ্ঠিত জামেয়া ইসলামিয়া মাদরাসা-ই তা'লীমুদ্দীন ও এতিমখানা মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দখল করে নিয়েছে আরও অতিরিক্ত ৭ শতাংশ জমি, যা পরে মিউটেশনেও যুক্ত করা হয়েছে।

বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও আদালতে মামলা করে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছেন দানকারীর নাতি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ মুরাদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বনমালিপুর মৌজার ১২০২ নম্বর দাগ ও ৮৮২ নম্বর খতিয়ানের আওতায় ১৯৪২ সালে জিন্নাতুন নেছা নামের এক নারী ৯ শতাংশ জমি মসজিদের নামে ওয়াকফ করেন। তবে বিএস হাল রেকর্ড অনুযায়ী ১২৭৯ নম্বর দাগের ১২ নম্বর খতিয়ানে মসজিদের নামে ১৬ শতাংশ জমি রেকর্ড হয়ে যায়। এর মধ্যে বাড়তি ৭ শতাংশ জমির মধ্যে ৪ শতাংশ বসতঘরের পাশ থেকে ও ৩ শতাংশ পাশের পালান থেকে দখলে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

এই বাড়তি জমিতে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ টয়লেট ও প্রস্রাবখানা নির্মাণ করায় দুর্গন্ধে বসবাসকারীরা টিকতে পারছেনা।

মুরাদ মাস্টার বলেন, "আমার দাদি ৯ শতাংশ জমি দান করেন মসজিদের জন্য। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মসজিদ বা মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ১৬ শতাংশ জমি ভোগ করছে। আমার ঘরের পাশে তারা টয়লেট নির্মাণ করেছে—এতে গন্ধে থাকা যায় না। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। আমি চাই এই টয়লেটটি সরিয়ে অন্যত্র নেওয়া হোক এবং জমির সীমানা স্পষ্ট করা হোক।"
বর্তমানে জমি মিউটেশন বাতিলের দাবিতে আদালতে মামলা করেছেন, যা বিচারাধীন রয়েছে।

মুরাদ মাস্টারের বোন ফজিলাতুন্নেছা দুলি বলেন, "আমরা লেখাপড়ার কারণে খুলনায় ছিলাম, বাড়িতে কেউ থাকত না। এই সুযোগে মসজিদ কমিটি বাড়তি জমি দখল করে নেয়। এখন আমরা আমাদের প্রকৃত অংশ ফেরত চাই।"

মসজিদের সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান নান্নু মিয়া বলেন, "কে কার জমি দখল করেছে, আমি ঠিক জানি না। তবে মামলা চলছে, আদালতের রায় মেনে নেওয়া হবে।"

মাদরাসার সহসভাপতি সৈয়দ ওয়ালিউর রহমান দাবি করেন, "মুরাদের জমির পশ্চিম পাশ দিয়ে রাস্তা কেটে নেয়া হয়েছে, সেটার ব্যাপারে তার জানা নাও থাকতে পারে।"

মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুদাচ্ছের হুসাইন জানান, "জমি সংক্রান্ত বিষয় কমিটি জানে, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।"

মাদরাসার সভাপতি হাফিজুর রহমান মতি বলেন, "মাদরাসার টয়লেট সেই জায়গায় অনেক আগে থেকেই আছে। তবে মুরাদ মাস্টার পরে বাড়ি তৈরি করেছেন। এখন আমাদের পরিকল্পনা আছে, টয়লেট সরিয়ে অন্যত্র নেওয়ার। জমিটি আমরা দখল করিনি। মামলা চলছে।"

এলাকাবাসীর অনেকে মনে করেন, আদালতের রায় দ্রুত কার্যকর হলে এমন বিরোধ থেকে মুক্তি মিলবে।

(কেএফ/এসপি/জুলাই ০৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test