E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

টাঙ্গাইলে গত ৬ মাসে অপমৃত্যু, ধর্ষণ ও মামলার সংখ্যা বেড়েছে 

২০২৫ জুলাই ১৪ ১৪:৫৩:১৫
টাঙ্গাইলে গত ৬ মাসে অপমৃত্যু, ধর্ষণ ও মামলার সংখ্যা বেড়েছে 

সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল জেলায় গত ৬ মাসে (জানুয়ারি,২৫ - জুন, ২৫ পর্যন্ত) অপমৃত্যু, যৌন নিগ্রহ ও মামলার সংখ্যা আশংকাজনক হারে বেড়েছে। মহা সড়কে বেড়েছে ডাকাতি আর দূর্ঘটনা। তবে ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়ন, অপমৃত্যু রোধে জেলা পুলিশের ভূমিকা অবিস্মরণীয় । তাৎক্ষণিক পুলিশি সেবা আর বিভিন্ন ক্লু-লেস মামলার রহস্য উদঘাটনে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ আন্তরিক । 'মব ভায়োলেন্স' প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও যেকোন মুহূর্তে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে সচেষ্ট রয়েছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ।  পুলিশি সেবা সাধারণ মানুষের দৌড় গোড়ায় পৌঁছানোর জন্য নিরলস ভাবে কাজ করছেন সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান। ফলশ্রুতিতে সাধারণ মানুষের  সাথে দুরত্ব কমেছে পুলিশের। পুলিশি সেবা এখন জনগণের দৌড় গোড়ায় । 

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২ টি উপজেলায় গত ৬ মাসে থানা পুলিশ,র্যাব, ডিবি,পিবিআই ও সিআইডি সহ সম্মিলিত পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন শাখা ১ হাজার ২ শত ২৩ টি মামলা তদন্ত করেছে। জেলায় সড়ক দূর্ঘটনা, পানিতে ডুবে মৃত্যু,মরদেহ উদ্ধার,গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা বা অপমৃত্যুর সংখ্যা ২০০ টি , খুন ৩৮ ও ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার ৭৬ জন নারী। যা বিগত ২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসের তুলনায় ২৫ সালের জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত কিছুটা বেশি। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ রেকর্ড অনুযায়ী ৬ মাসে সম্মিলিত পুলিশ বাহিনীর অধীনে ৯ শত ৫৯ টি নিয়মিত মামলা রজ্জু , অপমৃত্যু ১৪৯ টি, খুন ৪০টি ও ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন ৩৯ জন নারী ।

২০২৪ সালেই ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কে ১৫৩ টি দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩৫ জন, আহতের সংখ্যা আরো বেশি । ২০২৫ সালের জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত দূর্ঘটনার সংখ্যা ২৫৩ টি আর নিহত হয়েছেন ৬২ জন।

২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রায় এক বছরে টাঙ্গাইল জেলায় খুন হয়েছে ৭৮ টি, যৌন নিপীড়ন বা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১৫ জন নারী, অপমৃত্যু ৩৪৯ জনের ও পুলিশের বিভিন্ন শাখায় মামলা রজ্জু হয়েছে ২১২৮ টি।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোঃ আদিবুল ইসলাম, পিপিএম বলেন, মানুষ যেখানে সেখানে অপরাধ সংঘটিত হবে এটা স্বাভাবিক। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর পুলিশের কাজে কিছুটা শিথিলতা থাকলেও বর্তমানে তারা কর্মস্থলে পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ সরাসরি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাথে তার সমস্যার কথা বলতে পারছেন এবং তাৎক্ষণিক সেবা পাচ্ছেন। যা বিগত দিনে কখনই হয়নি। যতদিন যাবে পুলিশি সেবা জনগণের দৌড় গোড়ায় ততটা পৌঁছবে।

তিনি বলেন, কতগুলো মামলা হলো সেটা বিবেচ্য নয়। গুরত্ব দেই কতগুলো মামলায় জনগণের পাশে পুলিশ দাঁড়াতে পারলো এবং কতটা সমস্যার সমাধান করলো তার উপর।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, উত্তর বঙ্গের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলে যমুনা সেতু পূর্ব থানা এলাকা থেকে শুরু করে গোড়াই পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কে নিয়মিত টহল কার্যক্রম চলমান।মাদক কারবারিরা উত্তর বঙ্গের সীমান্ত এলাকা থেকে ছুটে আসা গণপরিবহন, মালবাহী বিভিন্ন গাড়ি ও ব্যাক্তিগত গাড়িতে অবৈধ মাদক পরিবহন করে থাকে। ডাকাত চক্র ডাকাতিসহ নারী নিপীড়নে সম্পৃক্ত হয়। টাঙ্গাইল জেলার অধীনে মহাসড়কের কিছু নির্জন এলাকাকে ব্যবহার করে ডাকাতি,খুন সহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এসব ঘটনায় জেলা পুলিশ তাৎক্ষণিক প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অপরাধীদের গ্রেফতার পূর্বক আদালতে সোপর্দ করতে সক্ষম হয়েছে। ক্লু-লেস মামলার রহস্য উদঘাটন পূর্বক অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।

এছাড়া জেলার অভ্যন্তরে মাদক, নারী নিপীড়ন, খুনসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে দিন-রাত নিরলস ভাবে কাজ করছে জেলা পুলিশ । বিভিন্ন থানায় সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে নিয়মিত মামলা রজ্জু করা হচ্ছে। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হচ্ছে। সর্বোপরি পুলিশ জনতার হতে পেরেছে। জেলার প্রত্যাকটি থানায় অনলাইন জিডি চালু রয়েছে। সাধারণ মানুষ সরাসরি ওসি'র সাথে কথা বলতে পারছে।এসপি'র সাথে কথা বলতে পারছে। অপরাধ দমন ও মাদক নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশ বদ্ধ পরিকর। অপরাধী যেই হোক তার কোন ছাড় নেই।

(এসএএম/এএস/জুলাই ১৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test