E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে খেলছে এক শিক্ষিকা 

২০২৫ জুলাই ১৪ ১৯:৪৫:৩৫
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে খেলছে এক শিক্ষিকা 

বিশেষ প্রতিনিধি : বোয়ালমারী ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ২৮ নং ত্রিপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা খায়রুন নেছা নূরীর বিরুদ্ধে উঠেছে চরম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামতো স্কুলে অনুপস্থিত থেকে সরকারি বেতন তুলে নিচ্ছেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দিনের পর দিন বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে।

২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। প্রাথমিক সময়ে কিছুদিন নিয়মিত পাঠদান করলেও, অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হয় তার অনিয়মিত উপস্থিতির ধারা। বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে তিনি মোট ৩ দিন অনুপস্থিত ছিলেন, এবং মে মাসে ১২ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত কোনো প্রকার ছুটির আবেদন ছাড়াই তিনি স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। জুলাই মাসে ২ তারিখে স্কুলে উপস্থিত থাকার পর ১৪ জুলাই পর্যন্ত আবার তিনি স্কুলে আসেননি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকর্মীরা জানান, এই ধরনের অনুপস্থিতির ফলে তার ক্লাসে পড়ানো বিষয়গুলো ঠিকভাবে কাভার করা যাচ্ছে না। অন্য শিক্ষকরা যদিও চেষ্টা করছেন ক্লাস নেওয়ার, কিন্তু বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের অভাবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।প্রতিদিন একজন শিক্ষককে ৫টি বিষয়ভিত্তিক ক্লাস নিতে হয়। প্রতিটি ক্লাসের সময় ৫০ মিনিট। খায়রুন নেছা নূরীর অনুপস্থিতির কারণে এই সময়গুলো অপচয় হচ্ছে, এবং শিশুরা শিক্ষার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ওয়ারেজ আলী খান বলেন,“তার এমন অনুপস্থিতির কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কাউকে না জানিয়ে, কোনো অনুমতি না নিয়েই সে দিনের পর দিন স্কুলে আসে না। বিষয়টি আমি শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছি।”

বোয়ালমারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “একজন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বড় ধরণের ক্ষতি হয়। তবে তার এভাবে অনুপস্থির কারণে অন্যান্য শিক্ষকদের মাঝে ভুূল ম্যাসেজ যায়। শুনেছি মে মাসে সে ১৬ দিন স্কুলে আসেনি তার জন্য তার ৫ দিনের বেতন কাটা হয়েছে। এটা আমি মনে করি অপরাধের চেয়ে তুলনা মূলক শাস্তি কম। আসলে আমাদের করার কিছু নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষএর ব্যবস্থা নিবে।”

অভিযুক্ত শিক্ষিকার বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাকে বিদ্যালয়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু আহাদ মিঞা জানান, “মে মাসে টানা ১৬ দিন অনুপস্থিত থাকার কারণে তাকে শোকজ করা হয়েছিল এবং ৫ দিনের বেতন কাটা হয়। এরপরও জুলাই মাসে আবার অনুপস্থিত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। এবার তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।”

স্থানীয় শিক্ষকমহল এবং অভিভাবকদের দাবি—এই ধরনের অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না। একজন সরকারি চাকরিজীবী যেভাবে দায়িত্বহীনভাবে কর্মস্থল ত্যাগ করছেন, তা সারা দেশের শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাড প্রাকটিসের জন্ম দিতে পারে।

(কেএফ/এসপি/জুলাই ১৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test