E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়

কথিত প্রধান শিক্ষকের পুর্নবহালের চেষ্টা রুখে দিলেন সহকারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা 

২০২৫ জুলাই ২১ ১৯:৪৯:৫৭
কথিত প্রধান শিক্ষকের পুর্নবহালের চেষ্টা রুখে দিলেন সহকারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা 

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কথিত প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুর রহিম খানের পুনর্বহালের অপচেষ্টা রুখে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বহু অভিযোগ আর বিক্ষোভের মুখে অভিযুক্ত সেই প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহিম খান শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য হন। আজ সোমবার দুপুরে লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে দায়িত্বে থাকাকালে দুর্নীতি, অসদাচরণ ও অশালীন ব্যবহারের অভিযোগে আব্দুর রহিম খান নিজেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে তিনি আইনি লড়াই শুরু করেন এবং আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছর পর ২০২৪ সালে আদালত তার মামলা খারিজ করে দেন।

মামলা খারিজের পর সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তিনি পুনরায় বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন এবং নিজেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেন। এর পর থেকেই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের উপর শুরু হয় মানসিক নির্যাতন, হুমকি ও অপমানজনক আচরণ।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা লিখিত অভিযোগে জানান, আব্দুর রহিম খান নারী শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে অশালীন মন্তব্য করেন, ফোনে অশ্লীল গান দেখাতে চান, শ্লীলতাহানির হুমকি দেন এবং ছাত্রীদের সাথেও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় কথা বলেন।

তপন বিশ্বাস নামে এক শিক্ষক জানান, “তিনি বলতেন, ‘আগে ছিলাম ৪৪ হাজার ভোল্ট, এখন হইছি ৮৮ হাজার ভোল্ট।’ এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে পুরো বিদ্যালয়ের পরিবেশ অশান্ত করে তোলেন'।

বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক থেকে দপ্তরি ও নৈশপ্রহরী—প্রত্যেককেই নানা অপমানজনক ও অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করা হতো। অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে অকারণে অর্থ ব্যয় করে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়ান, অথচ তার প্রধান শিক্ষক হিসেবে পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি আত্মীয় হিসেবে পরিচিত এক বিতর্কিত শিক্ষক এ.কে.এম আরিফ-উদ-দৌলাকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করেন, যিনি একাধিক বিদ্যালয় থেকে ছাত্রীর সঙ্গে অসদাচরণ, জাল সনদ বানানো, অর্থ আত্মসাৎ ও কম্পিউটার চুরির অভিযোগে বিতাড়িত হয়েছেন।

এই অবস্থায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা একত্র হয়ে প্রতিবাদ শুরু করলে তিনি বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যান। বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন সবাই।

এ বিষয়ে জানতে অত্র বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু রিয়াদ বলেন, সৃষ্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অভিযোগপত্রটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এতে আব্দুর রহিম খানের পূর্বের সাসপেনশন, আদালতের রায়, আর্থিক ও নৈতিক দুর্নীতির প্রমাণসহ সব কিছু সংযুক্ত রয়েছে।

(আরএম/এসপি/জুলাই ২১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test