E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

জমি সংক্রান্ত বিরোধ

ফরিদপুরে প্রতিপক্ষকে কোপানোর অভিযোগে সেনা সদস্যের নামে থানায় অভিযোগ

২০২৫ জুলাই ৩১ ২০:০৫:১২
ফরিদপুরে প্রতিপক্ষকে কোপানোর অভিযোগে সেনা সদস্যের নামে থানায় অভিযোগ

রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চারকি থেকে ছুটিতে এসে নিজ হাতে প্রতিপক্ষকে রাম'দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে রাকিব মোল্যা (২৩) নামের এক সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে।

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২৯ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ফরিদপুর সদরের চাঁদপুর ইউনিয়নের আজলবেড়া গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতে সেনাসদস্য রাকিব মোল্যাকে প্রধান আসামি করে, মোট আটজনের নাম উল্লেখ পূর্বক আরও ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় একটি অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আ. রশিদ খান (৬২) নামের ওই ব্যক্তি। ওই সেনাসদস্য চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে সম্প্রতি গ্রামের বাড়ীতে এসেছিলেন। এবং জমিটির বিরোধ মেটাতে কিছুদিন পূর্বে হওয়া এসিল্যান্ড অফিসের একটি মামলার তদন্তে স্থানীয় ভুমি অফিস থেকে আসা সরকারি কর্মকর্তাদের সামনে এ হামলা চালান ওই সেনাসদস্য ও তার সাথে থাকা লোকজন বলে জানান ওই ভুক্তভোগী।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ওই অভিযোগটির তদন্তকারি কর্মকর্তা ও ফরিদপুর কোতয়ালি থানার সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. শামসুর রহমান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, 'আমি এই মুহুর্তে মামলাটির তদন্তের কাজে ঘটনাস্থলে রয়েছি। ওই ঘটনায় কোতয়ালি থানায় পাল্টাপাল্টি দু'টি অভিযোগ হয়েছে। দু'টিই তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। 'তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবেন বলেও জানান এএসআই শামসুর রহমান।

ঘটনার দিন ভুক্তভোগী আ. রশিদ খানের করা থানায় অভিযোগের সূত্র ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত প্রতিপক্ষর সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিলো। একাধিক মাধ্যমে বেশ কয়েকটি শালিস মীমাংসার চেষ্টা করেও তা সমাধান করা সম্ভব না হওয়ায়, শেষ পর্যন্ত সদর এসিল্যান্ড অফিসে একটি মামলা করা হয়েছে। জমি সংক্রান্ত ওই মামলার তদন্ত করতে এসিল্যান্ডের নির্দেশে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মকর্তারা এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তদন্ত চলাকালীন ভুমি কর্মকর্তাদের সামনে সেনাসদস্য রাকিব মোল্যা (২৩) ও তার বাবা মহিদ মোল্যা (৪৫) এর নেতৃত্বে এজাহারে উল্লেখিত আটজনসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জন তাদের ওপর দেশীও অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

ভুক্তভোগী আ. রশিদ খান আরো জানান, 'ওই হামলায় সেনাসদস্য রাকিব মোল্লার হাতে থাকা রামদা দিয়ে তাকে কোপ দিলে ওই কোপ তার বাম পায়ের কুনুইয়ের নীচে লেগে কেটে যায় এবং তিনি তখন রক্তাক্ত জখম হলে স্থানীয়দের সাহায্যে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে ওই ভুক্তভোগী এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন, 'আমাদের কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলেও প্রতিপক্ষ মহিদ মোল্যার অঢেল টাকা ও তার ছেলের সরকারি চাকরি থাকার গরমে আমাদের সাথে জোর-জুলুম করে আসছে, নানা সময় হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এলাকার কাউকেই তারা এখন তোয়াক্কা করেন না।'

রশিদ খানের অভিযোগ শুনে তৎক্ষনাত উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, 'মহিদ মোল্যা এলাকায় সূদের ব্যবসা করায় তার কোনো টাকার অভাব নেই, অপরদিকে তার ছেলে রকিব মোল্লা সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে চাকরি পাওয়ার পর থেকে তিনি সমাজের কাউকেই আর গুনেননা। স্থানীয়ভাবে চেয়ারম্যান, মেম্বার, মাতুব্বর, থানা পুলিশ এমনকি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে শালিসে বসে কাগজপত্র দেখানো হলে, আমাদের পক্ষে আসে। আর তখনই প্রতিপক্ষরা সেটি না মেনে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এমনতাবস্থায়, সম্প্রতি কোনো উপায় না পেয়ে ফরিদপুর সদর এসিল্যান্ড অফিসে ভুমি মালিকানা নিষ্পত্তি একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলার তদন্ত করতে চাঁদপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তারা ওইদিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে জমির কাগজপত্র নিয়ে কর্মকর্তাদের নিকট আসার কিছুক্ষণ পরেই সেনাসদস্য রাকিব মোল্যা ও তার বাবা মহিদ মোল্যার নেতৃত্বে উপরোক্ত বিবাদীদের দ্বারা নিজ স্ত্রী-সন্তান সহ প্রতিপক্ষদের অতর্কিত আক্রমণের শিকার হন তিনি বলে জানান আ. রশিদ খান।

এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদ উজ্জামান উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, চাঁদপুর আজলবেড়া জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। দুইপক্ষই দু'টি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ দু'টির তদন্ত চলমান রয়েছে।'

তিনি আরও জানান, 'অভিযোগ দু'টি কোনোটিই এখনও মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি।' পুলিশের তদন্ত শেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি আসাদ।

)আরআর/এসপি/জুলাই ৩১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০১ আগস্ট ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test