E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সোনারগাঁয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের নামে প্রতারণা ও মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

২০২৫ আগস্ট ০৩ ১৯:২১:১৫
সোনারগাঁয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের নামে প্রতারণা ও মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের নামে প্রতারণা করে অর্থ আদায় ও মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিশিষ্ট জনদের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁ থানা গেটের সামনে অবস্থিত,মা কম্পিউটারস্ অনলাইন সার্ভিস এন্ড ট্রেনিং সেন্টারের মালিক মোকাররম দুলালের বিরুদ্ধে। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

গত শনিবার (২রা আগস্ট) সোনারগাঁ থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে আসা উপজেলার বাসিন্দা হিরন মিয়া নামে অভিযোগকারী বলেন, সিআর মামলা আছে বলে মিথ্যা কথা বলে দুলাল আমার কাছ থেকে ৩৬ হাজার টাকা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বাবদ হাতিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে আমি থানায় খবর নিয়ে জানতে পারি আমার নামে কোন মামলাই নাই। থানার লোক বলে পরিচয় দেয়ায় আমি সরল বিশ্বাসে তাকে টাকা গুলো দেই।

মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়িমজলিস এলাকার বাসিন্দা নাহিদ হোসেন বলেন, হেফাজতের মামলায় আমার নামে ভুয়া এজহার কপি দেখায় এবং মামলা থেকে নাম কাটিয়ে দেয়ার কথা বলে ৪০ হাজার টাকা দাবী করে। আমি বিষয়টি বুঝতে পেরে,টাকা না দেয়ায় থানার লোক কে ম্যানেজ করে আরো মামলায় নাম ঢুকিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল মোকাররম হোসেন দুলাল মিয়া। অপর অভিযোগ কারী মো: হাসান জীবিকার তাগিদে প্রবাস জীবনে পাড়ি দেয়ার আগে ৩০শে সেপ্টেম্বর থানার গেটের সামনে অবস্থিত মা কম্পিউটারস অনলাইন সার্ভিস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার দুলাল মিয়াার দোকানে অনলাইনে কাগজপত্র ঠিক করার জন্য তার সাথে কথা বললে, তিনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য ১২ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। যে কোন লোক তার দোকানে, মামলার অভিযোগ পত্র টাইপ করতে গেলে, সুযোগে বাদীর অজান্তে কিছু ব্যাক্তির নাম সংযোজন বিয়োজন করে, ভয়ভীতি মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায়ের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

এইসব অপকর্মের জন্য ২৪ এর অক্টোবরে তৎকালীন সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারীকে জানালে, তিনি তাৎক্ষণিক তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা ও তার দোকান বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন। থানা তাকে ধরতে তৎপর হলে সে আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে থেকে মোকাররম দুলাল কৌশলে,কিছু নামধারী সাংবাদিকদের সাথে মিমাংসা করে বিষয়টি দামাচাপা দেয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সোনারগাঁ থানার মুন্সী এএসআই কল্পনা আক্তারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হওয়ার সুবাদে যেকোন অপকর্মের অভিযোগ আসলে অলৌকিক ভাবে বেঁচে যেতেন দুলাল। কিন্তু গত ৫ই আগস্টের পর এএসআই কল্পনা আক্তারের বদলি ও ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ কারী ছাত্ররা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় দুলালের সকল অপরাধ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।

অভিযুক্ত মোকাররম হোসেন দুলাল কে অভিনব প্রতারণা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে কে বা কারা ষড়যন্ত্র করে এসব করাচ্ছে। আর কনস্টেবল কল্পনার সাথে আমার কোন ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিলোনা। কয়েকজন সাংবাদিক আমাকে নিয়ে অনলাইন পোর্টালে রিপোর্ট করেছিল, পরে তারা তা কেটে দেয়।

তৎকালীন সোনারগাঁ থানার ওসি মোঃ আব্দুল বারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন অনিয়ম ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে সোনারগাঁয়ে অসংখ্য সাংবাদিক তখন আমাকে ফোন করে জ্বালাতন করেছেন, এরা কোন ধরনের সাংবাদিক এদেরকে খতিয়ে দেখুন। যেখানে আমাদের জেলা পুলিশ সুপার সম্পূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন যে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য কোন পুলিশ কর্মকর্তা যেন সাধারণ জনগণের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা না নেওয়া হয়, অথচ মোকাররম দুলাল পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। বর্তমানে সোনারগাঁ থানায় কোন ওসি না থাকার সুযোগে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেকে দুর্বলতা মনে করে মা কম্পিউটারস অনলাইন সার্ভিস এন্ড ট্রেনিং সেন্টারের মালিক দুলাল মিয়ার অপকর্ম ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

(এসবি/এসপি/আগস্ট ০৩, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৩ আগস্ট ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test